যাত্রাবাড়ীতে পরিবহন শ্রমিক হত্যা: কাউন্সিলরসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে চাঁদা তোলা নিয়ে ২ গ্রুপের দ্বন্দ্বে পরিবহন শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) এক কাউন্সিলর ও তার ২১ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ডিএসসিসির ৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুম মোল্লাকে প্রধান আসামি করে নিহত ইমরান হোসেনের (৩৫) স্ত্রী পপি আক্তার গতকাল মঙ্গলবার মামলাটি করেন।
যাত্রাবাড়ী থানায় করা এ মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোরে যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার এলাকায় একটি গুদামের ভেতর পিকআপ ভ্যান চালক ও লাইনম্যান ইমরান হোসেনকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। এ সময় শাহাদাত (২০) ও সিদ্দিক (২৫) নামের আরও ২ লাইনম্যান আহত হন।
ইমরানের স্ত্রী পপির অভিযোগ, যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারে পরিবহন থেকে টোল আদায় নিয়ে বিরোধের জেরে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। লাইনম্যানরা গুদাম, কাঁচাবাজার, ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টোল আদায় করে থাকেন।
যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজহারুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে টোলের নাম করে বিভিন্ন সংগঠনের নামে চাঁদা আদায় করে কয়েকটি গ্রুপ।'
স্থানীয়রা জানান, আল আমিন ও উজ্জ্বল মোল্লার নেতৃত্বাধীন ২টি চাঁদা আদায়কারী গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। কাউন্সিলর মাসুম মোল্লার পৃষ্ঠপোষকতায় আকরামুজ্জামান ওরফে উজ্জ্বল মোল্লার গ্রুপ ওই এলাকায় চাঁদা আদায় করে থাকে। সম্প্রতি আল আমিনের গ্রুপও সেখানে চাঁদা আদায় শুরু করলে ২ পক্ষের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
ঢাকা জেলা ট্রাক-ট্যাংক-লরি-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি আবদুল জব্বার বলেন, 'গত ২ সপ্তাহ ধরেই ২ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। মঙ্গলবার উজ্জ্বলের গ্রুপ ইমরান এবং তার সঙ্গে থাকা অন্যদের অন্যদের আল আমিনের গ্রুপের লোক ভেবে আক্রমণ করে। কিন্তু ইমরান জেলা ট্রাক-ট্যাংক-লরি-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের হয়ে টোল আদায় করতেন।'
নিহতের স্ত্রীর অভিযোগ, কাউন্সিলর মাসুম তার স্বামীকে হত্যার নির্দেশ দেন এবং উজ্জ্বল, মোহাম্মদ আলী ও আরিফ ইমরানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন।
কাউন্সিলর মাসুমের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা যায়নি।
যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজহারুল ইসলাম বলেন, 'এ ঘটনায় ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা আসামিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখছি।'
Comments