নাসির-মিঠুনের লড়াই থামিয়ে বরিশালের টানা পঞ্চম জয়

ইফতেখার আহমেদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বড় পুঁজিই পেয়েছিল ফরচুন বরিশাল। তবে লক্ষ্য তাড়ায় লড়াইটা জমিয়ে দিয়েছিলেন ঢাকা ডমিনেটর্সের অধিনায়ক নাসির হোসেন ও মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারলেন তারা। তাতে ঢাকা থাকে হারের বৃত্তেই। অন্যদিকে টানা আরও একটি জয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে এল সাকিব আল হাসানের দল।

শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকা ডমিনেটর্সকে ১৩ রানে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৩ রান তোলে তারা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬০ রানের বেশি করতে পারেনি নাসির হোসেনের দল।

সিলেটের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারের পর এ নিয়ে টানা পঞ্চম ম্যাচ জিতে নিল বরিশাল। ছয় ম্যাচের তাদের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট। সিলেটের পয়েন্টও ১০। তবে রান ব্যবধানে এগিয়ে আছে তারা। অন্যদিকে তাদের ঠিক উল্টো অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে জয়ের পর এ নিয়ে টানা পঞ্চম হার দলটির।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিল ঢাকা। সৌম্য সরকারের সঙ্গে উসমান গনির ওপেনিং জুটিতে আসে ৪৬ রান। এ জুটি ভাঙেন করিম জানাত। উসমানকে কভার পয়েন্টে কামরুল ইসলাম রাব্বির ক্যাচে পরিণত করেন। স্কোরবোর্ডে আর ৪ রান যোগ হতে ফিরে যান আরেক ওপেনার সৌম্যও। দারুণ কিছু শটে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও আরও একবার হতাশ করেন এ ওপেনার। অবশ্য মিড উইকেট সীমানায় অতিরিক্ত ফিল্ডার সালমান হোসেনের ক্যাচে পরিণত হন তিনি।

এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মোহাম্মদ ইমরানও। রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। তবে চতুর্থ উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন নাসির। ৮৯ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। মিঠুনের বিদায়ে শেষ হয় তাদের প্রতিরোধ। তাকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন ওয়াসিম। এরপর চেষ্টা চালিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি নাসির।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন নাসির। ৩৫ বলের ইনিংসটি সাজান ৩টি চার ও ২টি ছক্কায়। ৪৭ রান আসে মিঠুনের ব্যাট থেকে। ৩৮ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ১৯ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩০ রানের ইনিংস খেলেন উসমান।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বরিশাল। প্রথমবারের মতো এবারের আসরে সুযোগ পেয়ে নেমেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন সাইফ হাসান। ইনফর্ম বোলার তাসকিন আহমেদের প্রথম ওভারেই মারেন দুটি বাউন্ডারি। তবে সালমান ইরশাদের করা পরের ওভারে হাঁকাতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে থার্ডম্যান সীমানায় তাসকিনের অসাধারণ এক ক্যাচের বলি হন এ ওপেনার।

সালমানের পরের বলে মেহেদী হাসান মিরাজের বিরুদ্ধে এলবিডাব্লিউর আবেদনে আঙুল তুলেছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মিরাজ। আরাফাত সানির করা এর পরের ওভারে আবারও দুর্দান্ত তাসকিন। এবার মিড উইকেটে ঝাঁপিয়ে এনামুল হক বিজয়ের ক্যাচ লুফে নেন এক হাতে। ফলে দলীয় ১৭ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বরিশাল।

তৃতীয় উইকেটে ২৭ রানের জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা চালান চতুরঙ্গ ডি সিলভা ও মিরাজ। এ দুই ব্যাটারকেই ফেরান ঢাকা অধিনায়ক নাসির হোসেন। চতুরঙ্গকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর মিরাজকে বোল্ড করে দেন তিনি। এরপর অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালান ইফিতেখার আহমেদ। আগের দিনই পঞ্চম উইকেটে বিশ্বরেকর্ড জুটি গড়েছেন এ দুই ব্যাটার।

তবে এদিন ভয়ঙ্কর কিছু করার আগেই জুটি ভেঙেছেন মুক্তার আলী। দারুণ এক স্লোয়ারে বোল্ড করে দেন সাকিবকে। তবে এরপর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে ঢাকার হতাশা বাড়ান ইফতেখার। অবিচ্ছিন্ন ৮৪ রানের জুটি গড়ে দলকে এনে দেন লড়াইয়ের পুঁজি।

আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া ইফতেখার এদিন পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরির দেখা। ৩৪ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় খেলেন হার না মানা ৫৬ রানের ইনিংস। ৩১ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। ১৭ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩০ রান করেন সাকিব। ঢাকার পক্ষে ১৬ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন নাসির।

Comments

The Daily Star  | English

Explosions rock Indian Kashmir

Sirens ring out in Jammu, projectiles in night sky; Islamabad says Indian drones earlier entered its airspace

10h ago