তুমব্রু ক্যাম্পে আগুন: স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে ২০০ রোহিঙ্গা পরিবার

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গতকাল বিকেলের আগুন। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গতকাল বুধবার আগুন লাগার পর ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা পরিবারগুলো স্থানীয় দুটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে ওই সীমান্তে গত দুইদিন গোলাগুলির পর আজ বৃহস্পতিবারও সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলি চলছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

বুধবার সকাল থেকে তুমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গাদের দুটি সশস্ত্র সংগঠন রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অগার্নাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে দিনভর থেমে থেমে গোলাগুলি হয়। এর মধ্যেই সন্ধ্যার দিকে শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগে।

কিছু পরিবার স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। অনেক রোহিঙ্গা পরিবার মিয়ানমারে চলে গেছে বলে শুনেছি

রোমেন শর্মা, ইউএনও, নাইক্ষ্যংছড়ি

আজ বৃহস্পতিবার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত আনুমানিক ২০০ রোহিঙ্গা পরিবার তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জুনিয়র হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।'

বিক্ষিপ্তভাবে কিছু পরিবার বুধবার রাতে মিয়ানমারেও চলে গেছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'আজ সকাল থেকেও রোহিঙ্গাদের দুটি পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি হয়। যখন গোলাগুলি চলে, তখন স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। সীমান্ত এলাকাজুড়ে বিজিবির সদস্যরা টহল জোরদার করেছে।'

গতকালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কয়েকশত ঘর ভস্মীভূত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে, ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা ও স্কুলে আশ্রয় নেওয়া পরিবারের সংখ্যা ঠিক কত, তা সঠিকভাবে জানাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন।

তবে এ অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখনো কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। 

জানতে চাইলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা আজ দুপুরে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কিছু পরিবার স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। অনেক রোহিঙ্গা পরিবার মিয়ানমারে চলে গেছে বলে শুনেছি।'

'আজ সকালের মধ্যে সঠিক পরিসংখ্যান বের করা সম্ভব হয়নি। খোঁজখবর নিয়ে আজকের মধ্যে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় কি না, দেখা হচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

ইউএনও রোমেন শর্মা আরও বলেন, 'এটি মূলত রোহিঙ্গাদের দুটি গ্রুপের মধ্যে ঘটনা। গতকাল যখন গোলাগুলি চলছিল, তখন স্থানীয়রা কিছুটা আতঙ্কিত হয়েছে।'

তুমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়া শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি (রোহিঙ্গা নেতা) দিল মোহাম্মদ ডেইলি স্টারকে জানান, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি অংশ এ ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এই ক্যাম্পে ৬২১টি পরিবারের প্রায় ৪ হাজার ২৮০ রোহিঙ্গা বসবাস করে।

সীমান্ত পরিস্থিতি জানতে বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরীকে একাধিকবার কল করা হলেও, তিনি রিসিভ করেননি।

সীমান্তের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে ঘুমধুম সীমান্ত পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সোহাগ রানা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মিয়ানমারের সশস্ত্র দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে বলে শুনেছি।  যেহেতু ঘটনাটি আমাদের দেশে নয়, সেহেতু সেখানে কী হয়েছে বলতে পারছি না।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

6h ago