সুচিত্রা সেনের জন্য শাড়ি উপহার পাঠিয়েছিলাম: ফেরদৌস

সুচিত্রা সেন ও ফেরদৌস। ছবি: সংগৃহীত

মহানায়িকা সুচিত্রা সেন, তার তুলনা তিনি নিজেই। আজও বাঙালির হৃদয়ে গেঁথে আছেন ভারত উপমহাদেশ জয় করা এই নায়িকা। তার অভিনীত সিনেমাগুলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জনপ্রিয়।

গত ১৭ জানুয়ারি সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবস। তাকে নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন ২ বাংলার জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস।

ফেরদৌস বলেন, 'কারো শূন্যস্থানই পূরণ হয় না। সুচিত্রা সেনের শূন্যস্থান আরও পূরণ হবে না। সাগরিকা, হারানো সুর থেকে শুরু করে কতই না সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। বাংলাদেশের পাবনা থেকে কলকাতা গিয়ে জয় করে নিয়েছেন কোটি কোটি মানুষের মন। তিনি নেই, কিন্ত তবুও আছেন। অভিনয় দিয়ে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন বছরের পর বছর।

সুচিত্রা সেনের কন্যা মুনমুন সেন আমার ভালো বন্ধু। কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করার সুবাদে মুনমুন সেনের সঙ্গে দারুণ একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে আমার। তারপর তো হিসেব নেই কত বছর তার বাসায় গিয়েছি। অসংখ্য স্মৃতি আছে আমার।

মুনমুন সেনের বাসায় যেতাম আর মনে মনে ভাবতাম কখনো যদি সুচিত্রা সেনের সঙ্গে আমার দেখা হতো! একটিবার যদি কাছ থেকে দেখতে পেতাম সুচিত্রা সেনকে! দেখতে পারতাম আমার স্বপ্নের নায়িকাকে! কিন্তু সম্ভব হয়নি। সেই সময় মুনমুন সেনের এক আত্মীয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ১৭ বছর ধরে সেখানে যাতায়াত করছেন। তবুও কখনো দেখার সুযোগ পাননি সুচিত্রা সেনকে।

একদিন মুনমুন সেনের বাসায় গেছি। কলিংবেল দেওয়ার পর দরজা খুলে দেন সুচিত্রা সেন। আমি তখনো বুঝতে পারিনি কে দরজা খুলে দিয়েছেন। এক মুহূর্ত সেখানে না থেকে দ্রুত তার রুমে চলে যান। তারপর দরজা বন্ধ করে দেন। আমি দরজার কাছে গিয়ে অনেকটা সময় দাঁড়িয়েছিলাম, যদি তার কণ্ঠ শুনতে পাই! কিন্তু পাইনি।

পরে মুনমুন সেন এসে আমাকে জানান তার মা দরজা খুলে ভেতরে চলে গেছেন। এরপর অনেকদিন দুষ্টুমি করে সুচিত্রা সেনের দরজায় নক করেছি। ভুল করেও দরজা খুলেননি। তবে তিনি যে দরজা খুলে দিয়ে ভেতরে চলে যান, ওই সময় আমার ভেতরে কী যে অনুভূতি হয়েছিল তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। বহুদিন সেটা আমার মনের ভেতরে খেলা করেছে।

মুনমুন সেনকে কতদিন বলেছি, একটু দেখার ব্যবস্থা করে দাও। সম্ভব হয়নি, তারপরও অনুরোধ করেছি।

সুচিত্রা সেন অবশ্য আমার ব্যাপারে জেনেছিলেন মুনমুন সেনের কাছে। আমি বাংলাদেশের মানুষ, ২ বাংলায় সিনেমা করছি এসব জেনে বাংলাদেশের গান শুনতে চেয়েছিলেন। সাদী মোহাম্মদ, দেশের গানসহ বেশ কিছু গানের সিডি দিয়েছিলাম। মুনমুন সেন আমাকে বলেছিলেন, সেসব পেয়ে তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন।

সুচিত্রা সেনের জন্য শাড়ি উপহার পাঠিয়েছিলাম। বাংলাদেশের শাড়ি পেয়ে তিনি ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। তার প্রয়াণের খবরটি শুনেছিলাম ভারতের নদীয়ায় বসে। সেদিন নদীয়ায় আমার শুটিং ছিল। কী যে মন খারাপ হয়েছিল। এই দিনটি এলেই সুচিত্রা সেনের জন্য মন খারাপ করে।'

Comments

The Daily Star  | English

Fulfilling sky-high expectations Yunus govt’s key challenge

Says ICG report on completion of interim govt’s 100 days in office

3h ago