ইজতেমা মাঠ পরিপূর্ণ, আছেন ২৬ দেশের দেড় হাজার বিদেশি অতিথি

ইজতেমা শুরুর ২ দিন আগ থেকেই টঙ্গীর তুরাগতীরে পৌঁছাতে শুরু করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। ছবি: আবু বকর সিদ্দিক আকন্দ/স্টার

পৌষের হাড়কাঁপানো শীতের মধ্যেই বাসে-ট্রাকে-পিকআপ ভ্যানে চড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে জড়ো হচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। সেখানে নিজ নিজ দলের আমিরগণ কথা বলছেন ইমান, আদব, আখলাক ও শৃঙ্খলা বিষয়ে।

তাবলিগ জামাতের বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে।

এবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা প্রথম পর্বে ১৩-১৫ জানুয়ারি এবং মাওলানা সা'দ পক্ষের অনুসারীরা ২০-২২ জানুয়ারি ইজতেমা পরিচালনা করবেন। প্রতি পর্বেই শেষ দিনে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এখন পর্যন্ত ২৬টি দেশের প্রায় দেড় হাজার বিদেশি অতিথি ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া ২ দিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লাখো মুসল্লি অবস্থান নিয়েছেন তাদের জন্য ময়দানের নির্ধারিত খিত্তায়।

জহির ইবনে মুসলিম বলেন, 'সভাপতিহীন বিশ্ব ইজতেমার এত বড় আয়োজন প্রতিবছরই অত্যন্ত সু-শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করা হয়। পুরো ইজতেমা ময়দানটি মুরব্বিদের পরামর্শে সাজানো হয়। ময়দানে জেলাওয়ারি মুসল্লিদের অবস্থান, রান্না-বান্না করার জায়গা, টয়লেট, অজুখানা, গোসলখানা সবই সুর্নিদিষ্ট করা থাকে।'

এরমধ্যেই ইজমেতা মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ছবি: আবু বকর সিদ্দিক আকন্দ/স্টার

আজ সকালে ইজতেমা মাঠ ঘুরে দেখা যায়, এখানে ৮টি সড়ক, ৫টি ভাসমান সেতুসহ মোট ১৩টি প্রবেশপথ রাখা হয়েছে। মুসল্লিরা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে দল বেঁধে মাঠে প্রবেশ করছেন। মাঠে প্রবেশ করেই নিজ নিজ খিত্তায় (নির্ধারিত জায়গা) অবস্থান নিচ্ছেন তারা।

ময়মনসিংহের ফুলপুর থেকে আসা রফিকুল ইসলাম জানান, এবার ৩ বছর পর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে মাঠের পরিবেশ বা প্রস্তুতির বিষয়ে তেমন কিছু জানা নেই তার। তাই জায়গা পেতে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় আগেভাগেই চলে এসেছেন। পৌষের হিমেল হাওয়া থাকলেও দুই বছর পর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ায় তিনি আনন্দিত।

একইভাবে শেরপুরের আলী আজগরও ইজতেমা শুরুর ২ দিন আগেই এখানে চলে এসেছেন। তিনি বলেন, 'গত ইজতেমায় মাঠে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় বসতে হয়েছিল।'

গণমাধ্যম সমন্বয়কালী জহির ইবনে মুসলিমের ধারণা, মাঝে একটি বিরতির পর এবারের ইজতেমায় রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেবেন। তিনি বলেন, 'এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ- প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে করা হয়। মুসল্লিরা তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতী কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।'

আজ বৃহস্পতিবারও মুসল্লিরা বাসে-ট্রাকে চড়ে, পায়ে হেঁটে তুরাগতীরে পৌঁছাচ্ছেন। ছবি: আবু বকর সিদ্দিক আকন্দ/স্টার

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, এবার ইজতেমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিসুর রহমান জানান, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকাণ্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় করে থাকে জেলা প্রশাসন। ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসনের দিক নির্দেশনায় বিভিন্ন কাজ তদারকিসহ বিশ্ব ইজতেমার সব দিক পর্যবেক্ষণ করে জেলা প্রশাসন।

 

Comments

The Daily Star  | English
CSA to be repealed

Govt will scrap CSA within a week

The Cyber Security Act will be repealed within a week and all cases filed under the act will be withdrawn, Nahid Islam, adviser to the posts, telecommunications, and information technology ministry, said yesterday.

14m ago