ফেলানী হত্যার এক যুগ: বিচার দাবি গ্রামবাসীর

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ রামখানা কলোনীটারী গ্রামে ফেলানীর কবর জিয়ারত করেন গ্রামবাসী। ছবি: সংগৃহীত

বিএসএফের গুলিত নিহত বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের মরদেহ ঝুলে ছিল সীমান্তের কাঁটাতারে। ফেলানীর ঝুলে থাকা নিথর দেহের ছবি দেশে-বিদেশে নিন্দার ঝড় তুলেছিল। এক যুগ পরও সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি।

আজ শনিবার বিকেলে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ রামখানা কলোনীটারী গ্রামে ফেলানীর কবরে জড়ো হয়েছিলেন গ্রামের মানুষ। সেখানে কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল ও কূলখানি হয়। বেঁচে থাকলে ফেলানীর বয়স হতো ২৬ বছর।

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, গ্রামের ৬০-৬৫ জন ফেলানীর কূলখানিতে এসেছিলেন। ফেলানী নিহত হওয়ার পর প্রতিবছরই কূলখানি করা হয়। নুর ইসলাম জানান, দোয়া মাহফিল শেষে গ্রামের মানুষ ফেলানী হত্যা বিচার দাবি করেন। ন্যায় বিচার হলে ফেলানীর আত্মা শান্তি পাবে।

গ্রামবাসীদের একজন মোসলেম উদ্দিন (৬৭) ডেইলি স্টারকে বলেন, ফেলানীর হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যদের এখনো বিচার হয়নি। আমরা ফেলানীকে হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করছি।'

ফেলানী হত্যা
ফেলানীর ছবি নিয়ে বাবা নুর ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, প্রতিবছর এই দিনটা যায় কান্না করে। আমি আজো ফেলানীর মুখটা ভুলতে পারিনি। এখনো রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না।'

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্যরা ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে। তার মৃতদেহ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলেছিল সাড়ে ৪ ঘণ্টা। সেই ছবি মানুষকে বিক্ষুব্ধ করেছিল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই হত্যার বিচারের দাবি তোলে। ওই ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পর বিজিবির কাছে ফেলানীর মরদেহ হস্তান্তর করেছিলে বিএসএফ।

ফেলানী হত্যা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ফেলানীর মরদেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করছে বিএসএফ। ছবি: সংগৃহীত

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম জানান, ভারতের আসাম থেকে তিনি ফেলানীকে নিয়ে দেশে ফিরছিলেন। ২০০২ সাল থেকে আসামে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। সেখানে তিনি একটি চায়ের দোকান চালাতেন। ফেলানি যখন নিহত হয় তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর।

কুড়িগ্রামের মানবাধিকার কর্মী অ্যডাভোকেট অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানী হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে। ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর শুনানির পর আদালতে শুনানির তারিখ বার বার পিছিয়েছে। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে ফেলানী হত্যা মামলাটি এখনো বিবেচনাধীন।

Comments

The Daily Star  | English

$14b a year lost to capital flight during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

15h ago