শীতে বাড়ছে নিউমোনিয়া ও শিশুমৃত্যু

শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। ঢাকার ২টি বড় হাসপাতালেও একই অবস্থা দেখা গেছে।
নিউমোনিয়া
স্টার ফাইল ফটো

শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। ঢাকার ২টি বড় হাসপাতালেও একই অবস্থা দেখা গেছে।

গত ডিসেম্বরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৪৩৭ শিশুকে ঢাকার বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে (বিএসএইচআই) ভর্তি করা হয়েছিল। যা গত নভেম্বরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। নভেম্বরে এই সংখ্যা ছিল ৩১৫।

বিএসএইচআইয়ের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঠান্ডা আবহাওয়ায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়। নভেম্বরে আমাদের হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৪৩ শিশু মারা গেছে। ডিসেম্বরের সংখ্যাটি এই মূহূর্তে আমার কাছে নেই, তবে নভেম্বরের কাছাকাছিই হবে।'

এ ছাড়া, বিএসএইচআই তীব্র নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অনেক শিশুকে আইসিইউয়ে ভর্তির জন্য অন্যান্য হাসপাতালে রেফার করে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির নিউমোনিয়া ওয়ার্ডের একজন চিকিৎসক।

ওই চিকিৎসক জানান, যাদের অন্যান্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হলে তা বিএসএইচআইয়ের মৃত্যু তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা সামসাদ বলেন, 'প্রতি বছর শীত মৌসুমে সারাদেশে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ে। সম্প্রতি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০টি শিশু ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।'

গত নভেম্বরে ঢামেক হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু ভর্তির সংখ্যা ছিল ২-৩টি। এরপর থেকেই এই সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এই ঢামেক চিকিৎসক।

ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের কারণে হওয়া নিউমোনিয়া শিশুদের ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। ফলে, শিশুরা মৃত্যুর মুখে পড়ে যায়। এ অবস্থায় শিশু মৃত্যু এড়াতে অভিভাবকদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। যদি কোনো শিশুর কাশি, সর্দি বা অনেক জ্বর ও শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিত।

ডা. জাহাঙ্গীরের মতে, এ ধরনের রোগীদের দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি করাই মৃত্যুর প্রধান কারণ।

তিনি বলেন, 'কোনো শিশুর সর্দি হলে বাবা-মায়ের উচিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। যদি শিশুর শ্বাসকষ্ট হয়, তাহলে অভিভাবকদের উচিত তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।'

ডা. ইফফাত আরা শামসাদ বলেন, নিউমোনিয়া যেহেতু ফুসফুসের সংক্রমণ, তাই এর খুব সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে- কাশি, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর। স্বাভাবিক কাশি বা জ্বরের ক্ষেত্রে সাধারণত শ্বাসকষ্ট হয় না।

বাংলাদেশে এখনো ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। আইসিডিডিআর,বির তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়।

তবে, সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া গেলে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

12h ago