অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ থাকা সত্ত্বেও মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারছে না বিমান

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের বহরে ২১টি আধুনিক উড়োজাহাজ রয়েছে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তা সত্ত্বেও গত ৫ বছরে সংস্থাটি গন্তব্যের তালিকায় ৩টি নতুন স্থান যোগ করতে পেরেছে।

অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, এর জন্য দায়ী রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থাটির পরিকল্পনার অভাব ও দুর্বল বিপণন নীতি।

বিমান বর্তমানে ২০ আন্তর্জাতিক গন্তব্যে যাতায়াত করে, যার বেশিরভাগই স্বল্প অথবা মধ্যম দূরত্বের। কিন্তু ২০০০ সালের দিকে এর চেয়েও কম উড়োজাহাজ নিয়ে সংস্থাটি ২৯ আন্তর্জাতিক গন্তব্যে যাতায়াত করত, যার মধ্যে ছিল নিউইয়র্ক, টোকিও ও ইউরোপের বেশ কিছু শহর।

২০০৬ সালের পর বিমান পর্যায়ক্রমে নিউইয়র্ক, রোম, টোকিও, ব্রাসেলস, আমস্টারডাম, লিবিয়াসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। মূল কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা আর্থিক সমস্যা, আধুনিক উড়োজাহাজের স্বল্পতা ও রুট অলাভজনক হয়ে যাওয়ার কথা জানান।

যদিও বিমানের হাতে এখন ৬টি বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ আছে, তবুও সংস্থাটি লোকসান দিচ্ছে এবং গড়পড়তা সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

২০২২ সালে বিমান ৩ নতুন গন্তব্য টরেন্টো, শারজাহ ও গুয়াংজুতে যাতায়াত শুরু করে।

নিয়মিত প্রচুর যাত্রী থাকা সত্ত্বেও অ্যাভিয়েশন সেবার বাজারে বিমানের অংশ কমেছে এবং নতুন উড়োজাহাজগুলো ধারণক্ষমতা অনুযায়ী ব্যবহৃত হচ্ছে না।

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিমান বাংলাদেশ প্রায় প্রতি বছরই লোকসান করেছে।

নথি অনুযায়ী, গত ৫ অর্থবছরের মধ্যে ৩টিতেই বিমান লোকসান করেছে।

উড্ডয়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, বাকি ২ বছর লাভ করলেও সেটাকে লাভ বলা যায় না। কারণ ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৩ হাজার কোটিরও বেশি এবং প্রতি বছর নতুন উড়োজাহাজের কিস্তি হিসেবে সংস্থাটি প্রায় ২৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করে।

উড্ডয়ন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলমের মতে, বিমান আর্থিক বিবরণী প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা অবলম্বন করে না।

২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হওয়ার পর বিমান নতুন উড়োজাহাজ কেনার জন্য ১৯ হাজার ২০ কোটি টাকা খরচ করে। বিমানের বহরে এখন ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮, ২টি বোয়িং ৭৮৭-৯, ৬টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৫টি দে হাভিলান্ড কানাডা ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ উড়োজাহাজ আছে।

বিমানের উড়োজাহাজের মধ্যে ১৮টি নিজস্ব এবং ৩টি ইজারা নেওয়া।

ওয়াহিদুল আলম জানান, বিমানে বিশেষজ্ঞ ও পেশাদার কর্মীর অভাব রয়েছে।

সম্প্রতি বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম ডেইলি স্টারকে জানান, প্রতিষ্ঠানের বৈমানিক ও ক্রু সদস্য স্বল্পতার কারণেই এটি নতুন গন্তব্যে যাতায়াত করছে না এবং সেবার মানোন্নয়ন করতে পারছে না।

তিনি আবারও টোকিও ও নিউইয়র্কে যাতায়াত শুরুর পরিকল্পনার কথা জানান।

এ ছাড়াও, ঢাকা বিমানবন্দরে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বিমান এশিয়ার শীর্ষ ১০ উড়োজাহাজ সংস্থার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা করছে।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন Biman failing to tap into its sleek fleet

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

6h ago