লামায় ম্রোদের বাড়িঘরে আগুন-ভাঙচুরের অভিযোগ
বান্দরবানে লামায় সরই ইউনিয়নে রেঙয়েন কারবারি পাড়ায় ম্রোদের ঘরে আগুন দেওয়া, হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
হামলায় শিকার ও ভুক্তভোগীরা দ্য ডেইলি স্টারকে এ অভিযোগ করে বলেন, আজ সোমবার ভোররাত ১টার দিকে ৫-৬ ট্রাকে করে বহিরাগতরা এসে রেঙয়েন ম্রো পাড়ায় আগুন দেয়।
রেঙয়েন কারবারি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতে আমরা ঘুমিয়ে পড়েছি। হঠাৎ মানুষের কান্না-চিৎকারে ঘুম ভাঙে। ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখি ৩/৪টা ঘরে আগুন জ্বলছে।'
'তাড়াতাড়ি উঠে নিচে নামতে গিয়ে দেখি আমার ঘরের দিকে ১০-১৫ জন সেটেলার বাঙালি আসছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাশের ঝোপে লুকিয়ে থাকি। তারা ঘরে এসে ভাঙচুর করে। আমাকে না পেয়ে ঘর তছনছ করে চলে যায়।'
'এখন পর্যন্ত ৭ ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। ৫-৬টি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ৫-৬টি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি,' যোগ করেন তিনি।
রেঙয়েন কারবারির অভিযোগ, 'লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকের পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত দেলোয়ার, নুরু ও মহসিনের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে।'
পার্শ্ববর্তী লাংকম পাড়ার কারবারি লাংকম ম্রো ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গভীর রাতে সেটেলার বাঙালিরা আমাদের প্রতিবেশী রেঙয়েন ম্রো পাড়ায় আগুন দেয় ও হামলা করে।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লামা থানার ডিউটি অফিসার এসআই (নিরস্ত্র) হোসেন ইবনে নাইম ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এরকম কোন ঘটনার কথা শুনিনি।'
একই বক্তব্য দেন লামা সার্কেলের এসপি মো. আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানি না। আপনার মাধ্যমে খবর পেলাম। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।'
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজিও বিষয়টি জানেন না মন্তব্য করে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাটা আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। সেখান গ্রামবাসীদের সঙ্গে রাবার কোম্পানির মধ্যে অনেকদিন ধরে বিরোধ চলছে। খতিয়ে দেখতে হবে যে, প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'যদি রাবার কোম্পানি ঘটনা ঘটিয়ে থাকে, তাহলে ওদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।'
লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার মো. কামাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামে আগুন ও হামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। শুনেছি গ্রামবাসীরা আমাদের ৪০০ একর জায়গায় নতুন করে ঘর তৈরি করছে। ওই জায়গা আমাদের। ওদের না।'
Comments