বড়দিনে এত কম মানুষের জন্ম কেন

বড়দিন
ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

বড়দিন ও নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহের দিনগুলো সাধারণত উৎসবমুখর থাকে। সারা বিশ্বে এই সময়ে সবাই পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে উৎসবে মেতে ওঠেন। এত উৎসবের মধ্যেও একটা অভাবনীয় ব্যাপার হচ্ছে এই সময়ে তুলনামূলক খুব কম সংখ্যক মানুষেরই জন্মদিন থাকে।

পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে বড়দিনে সন্তান জন্ম দেওয়ার হার সবচেয়ে কম। ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও আয়ারল্যান্ডে এই হার দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।

সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে এই দেশগুলোয় সবচেয়ে 'অজনপ্রিয়' তারিখ হচ্ছে ২৬ ডিসেম্বর। সেদিন ব্রিটিশরা 'বক্সিং ডে' উদযাপন করেন।

যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলোয় 'ক্রিসমাস ডে', 'বক্সিং ডে' ও নতুন বছরের শুরুর দিনগুলো সন্তান জন্মদানে কেন এতটা 'অজনপ্রিয়'?

সবচেয়ে কম ও বেশি জনপ্রিয় জন্মদিন

যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে 'অজনপ্রিয়' দিনগুলোর সবগুলোই ছুটির দিন—ক্রিসমাস ডে, নতুন বছরের প্রথম দিন, ৪ জুলাই (যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস) ও থ্যাংকসগিভিং ডে।

সাল ও স্থানভেদে বছরের সবচেয়ে বেশি সন্তান জন্ম নেওয়া দিনের তুলনায় ক্রিসমাস ডে'তে অন্তত ৩০-৪০ শতাংশ শিশু কম জন্ম নেন।

এ ধরনের উৎসবমুখর ছুটির দিনগুলোয় কমসংখ্যক শিশু জন্মগ্রহণের অন্যতম কারণ হচ্ছে—এ দিনগুলোয় সাধারণত সিজারিয়ান অপারেশন খুব কম হয়। চিকিৎসকরা ছুটিতে থাকেন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩ শিশুর মধ্যে ১ জনের জন্ম হয় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে। এমনকি, স্বাভাবিক জন্মদানের ক্ষেত্রেও অনেক চিকিৎসক হবু মায়ের ব্যথা উপশমের ওষুধ দেন, যা সন্তান জন্মদানকে বিলম্বিত করে।

বড়দিন বা নতুন বছরে সন্তানের জন্মহার অনেক কম হওয়ার আরেকটি কারণ হলো—তখন পশ্চিমের দেশগুলোয় মানুষ 'সময় ব্যবস্থাপনা' নিয়ে অনেক চাপে থাকেন।

ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও নিউজিল্যান্ডে এপ্রিলের ১ তারিখেও সন্তান জন্মহার অনেক কম। ছুটির দিন না হলেও মায়েরা সাধারণত 'এপ্রিল ফুল'র দিনে সন্তান জন্ম দিয়ে পরবর্তী জীবনে শিশুটিকে অনর্থক উপহাসের কারণ হতে দিতে চান না।

সন্তান জন্মদানের সবচেয়ে জনপ্রিয় সময় হচ্ছে শরৎকাল। যুক্তরাষ্ট্রে সন্তানের সম্ভাব্য জন্মদিনের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০টি দিনের সবগুলোই সেপ্টেম্বরে। ইংল্যান্ড, ওয়েলস, আয়ারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডে জনপ্রিয় দিনগুলো হচ্ছে অক্টোবর মাসে।

অনিবন্ধিত জন্ম

দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে ইংরেজি ভাষাভাষী নয়, এমন দেশগুলোয় এসব তথ্য অতটা সংরক্ষণ করা হয় না। শিশুরা সাধারণত কখন জন্মগ্রহণ করে এ ব্যাপারে গবেষণাগুলো তুলনামূলক নতুন। কারণ শত শত বছর ধরে মানুষ শিশুদের জন্মহারের তথ্য সংরক্ষণ করতো না।

যুক্তরাষ্ট্রেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদের ব্যবহার ব্যাপকহারে চালু ছিল না।

যদিও অনেক দেশ এখন শিশুর জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে। এখনো বিশ্বে জন্ম নেওয়া প্রতি ৪ শিশুর অন্তত ১ জনের জন্ম নিবন্ধন হয় না।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, সন্তান জন্ম দেওয়ার জনপ্রিয় মাসগুলো নির্ভর করে নির্দিষ্ট দেশের অক্ষাংশ বা ল্যাটিচিউডের ওপর।

নরওয়ে বা রাশিয়ার মতো হাই-ল্যাটিচিউড দেশগুলোয় জুলাই ও আগস্ট হচ্ছে সন্তান জন্ম দেওয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাস। আবার দক্ষিণ আমেরিকার এল সালভাদরের মতো বিষুবরেখার খুব কাছের দেশে এই সময় হচ্ছে অক্টোবর।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

8h ago