অস্ট্রেলিয়া কেন একই সঙ্গে দেশ ও মহাদেশ

অস্ট্রেলিয়ার মানচিত্র। ছবি: পিক্সেলস.কম

নানা কারণেই অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর বাকি সব অঞ্চলের চেয়ে আলাদা। বহুমাত্রিক ভূপ্রাকৃতিক দৃশ্য ও বিরল সব প্রাণীর আবাস দেশটিতে।

অস্ট্রেলিয়া নিয়ে আলোচনা হলে দেশটির জীববৈচিত্রের কথা বিশেষভাবে চলে আসে। দেশটির প্রতি ৫ প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে অন্তত ৪ প্রজাতির প্রাণীই পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। অর্থাৎ, দেশটির অন্তত ৮০ শতাংশ গাছ-গাছালি ও প্রাণীর আবাসস্থল শুধুমাত্র সেখানেই। পৃথিবীর অন্য কোথাও এই প্রাণীদের অস্তিত্ব নেই।

এই অসাধারণ জীববৈচিত্র্য দেশটিকে বিশ্বের বাকি সব দেশ থেকে আলাদা করেছে। একইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ বা অঞ্চল যেটি একই সঙ্গে দেশ ও মহাদেশ হওয়া শর্ত পূরণ করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার ৮০ শতাংশ প্রাণী পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। ছবি: দ্যওয়াইল্ডলাইফ.কম

একটি দেশ হতে কী কী শর্ত পূরণ করতে হয়, সেটা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। যাদের নিজস্ব সরকার ব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট ভূখণ্ড আছে, তাকে দেশ বলা যায়। কিন্তু মহাদেশ হওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত কোনো শর্ত নেই। কিন্তু অন্যান্য মহাদেশগুলোর সঙ্গে কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যে মিল থাকায় অস্ট্রেলিয়াকে একটি মহাদেশ বলা যায়।

সাধারণত অনেকগুলো দেশ ও বিশাল ভূখণ্ড নিয়ে একটি মহাদেশ গঠিত হয়। প্রতিটি মহাদেশ আলাদা টেকটোনিক প্লেটের ওপর ভাসমান থাকে এবং অন্য অঞ্চলের তুলনায় স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, গাছপালা ও জীববৈচিত্র্য থাকে। এটা অবশ্য কোনো বই বা সনদে লিখিত শর্ত না। প্রতিটি মহাদেশকে আলাদাভাবে তুলনা করলে এগুলো একেকটি তুলনার একক হতে পারে।

তবে এসব প্রচলিত শর্তের ব্যতিক্রমও আছে। যেমন: এশিয়া ও ইউরোপ একই টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থিত। কিন্তু তারপরও মহাদেশ দুটির সংস্কৃতি, মানুষের জীবনযাপনের পদ্ধতি ও জীববৈচিত্র্য অনেকটাই আলাদা।

অস্ট্রেলিয়ার মানচিত্র। ছবি: গুগল ম্যাপ

অস্ট্রেলিয়াকে কেন দ্বীপ নয়

অস্ট্রেলিয়ার আয়তন ২৯ লাখ বর্গমাইল। এই আয়তন ২১ লাখ বর্গমাইল আয়তনের গ্রিনল্যান্ডের আয়তনের কাছাকাছি। কিন্তু গ্রিনল্যান্ডকে দ্বীপদেশ বলা হলেও অস্ট্রেলিয়াকে মহাদেশ বলা হয়। কেন?

এখানেও মূল কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিরল ও স্বতন্ত্র জীববৈচিত্র্য। অস্ট্রেলিয়ার মানচিত্রের দিকে তাকালে বোঝা যায় যে দেশটি অবস্থানগত দিক থেকে বাকি পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন। হাজারো বছর ধরে এই বিচ্ছিন্ন অবস্থা দেশটিতে স্বজাতীয় জনগোষ্ঠী, স্বতন্ত্র গাছপালা ও জীববৈচিত্র্য প্রজননে সাহায্য করেছে।

কিন্তু গ্রিনল্যান্ডের ক্ষেত্রে তা বলা যায় না। দ্বীপদেশটিতে স্বতন্ত্র জীববৈচিত্র্য নেই। দেশটির সংস্কৃতি ও জীববৈচিত্র্য আর্কটিক অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও পাওয়া যায়।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus opens second round of talks to strengthen national unity

'Beautiful July Charter' would be unveiled following discussions, he says

1h ago