কারাগারে কৃষক: পাবনায় সমবায় ব্যাংকের তদন্ত দল

কৃষক কারাগারে তদন্ত
ঋণ খেলাপির মামলায় ১২ কৃষক কারাগারে যাওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের একটি তদন্ত দল সোমবার পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ভারইমারি গ্রাম পরিদর্শন করে। ছবি: সংগৃহীত

ঋণ খেলাপির মামলায় ১২ কৃষক কারাগারে যাওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের একটি তদন্ত দল সোমবার পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ভারইমারি গ্রাম পরিদর্শন করেছে।

এ সময় তারা কৃষক সমবায় সমিতির নেতা ও সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন।

কৃষকদের ঋণ বিতরণ ও ঋণ পরিশোধে নানা অনিয়ম ও অসঙ্গতির কথা উঠে আসে এসময়। তদন্ত শেষে এ সপ্তাহেই রিপোর্ট জমা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য ভারইমারি উত্তরপারা সবজি চাষি সমবায় সমিতির ৪০ জন কৃষকের একটি তালিকা তৈরি করে ২০১৬ সালে ১৬ লাখ টাকা ঋণ দেয় বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক, পাবনা শাখা।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ঋণ গ্রহণের পর কিস্তির টাকা ঠিকমতো পরিশোধ না করায় ৩৭ জন কৃষকের কাছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা পাওনা হয়ে যাওয়ায় খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে সমবায় ব্যাংক ২০২১ সালে ৩৭ জন কৃষকের নামে একটি মামলা করে।

আদালত খেলাপি ৩৭ জন কৃষকের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করলে পুলিশ গত ২৪ নভেম্বর ১২ জন কৃষককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। পরবর্তীতে আদালত ২৭ নভেম্বর আটক ১২ জনসহ ৩৭ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।

এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনার পর ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল গঠন করে সমবায় ব্যাংক। ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক আহসানুল গনির নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত দল আজ ভারইমারি গ্রামের তদন্ত কাজ শুরু করে।

আহসানুল গনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ২০১৬ সালে সমিতির ৪০ জন কৃষকের প্রত্যেককে ৪০ হাজার টাকা করে ১৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হয়।

তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে ও তাদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ কৃষক লোনের ৪০ হাজার টাকা পায়নি। কৃষকদের নামে ৪০ হাজার টাকার চেক দেয়া হলেও সমিতির নেতাদের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পরিমান টাকা পায় কৃষকরা। ফলে অনেকে টাকা পরিশোধ করেছে বলে দাবি করলেও প্রকৃত লোনের টাকা পরিশোধ হয়নি ফলে বেশিরভাগ কৃষক খেলাপি হয়েছেন।

এদিকে, সমিতির সভাপতি বিলকিস নাহার বলেন, এটি গ্রুপভিত্তিক লোন, সব সদস্য সমান পরিমান টাকা পরিশোধ না করায় সবাই অভিযুক্ত হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, সমিতির নামে ১৬ লাখ টাকার ঋণের ১৩ লাখ টাকা পরিশোধ করার পরও ১৩ লাখ টাকার খেলাপি ঋণের মামলা করে ব্যাংক কৃষকদের হয়রানি করছে।

সমিতির পক্ষ থেকে ঋণের বিপরিতে আমার চেক জমা আছে সেখানেও আরও একটি মামলা রয়েছে।

ব্যাংকের উদাসিনতায় এবং কৃষকদের অবহিত না করে মামলা করায় সাধারণ কৃষক হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সমবায় ব্যাংকের তদন্ত দলের প্রধান আহসান গনি বলেন, ব্যাংক আইন অনুযায়ী কাজ করেছে। মামলা করার আগে প্রত্যেকের নামে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তবে ঋণের কাজে এসব অসঙ্গতির সাথে ব্যাংকের কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্তে কাজ করছে ব্যাংক।

 

Comments

The Daily Star  | English

Public Service Act: Ordinance out amid Secretariat protests

The government last night issued an ordinance allowing dismissal of public servants for administrative disruptions within 14 days and without departmental proceedings.

8h ago