নিজ দেশের তারকার নাম নিয়ে চাকরি হারালেন তুর্কি ধারাভাষ্যকার!
ঘটনা গ্রুপ পর্বে মরক্কো-কানাডা ম্যাচে। খেলার তিন মিনিট ৩১ সেকেন্ডেই গোল করে বসেন মরক্কোর হাকিম জিয়েশ। এবারের বিশ্বকাপে এটাই সবচেয়ে দ্রুততম গোল। তুরস্কের টিভি চ্যানেলে বর্ণনা করতে গিয়ে ইতিহাসের দিকে ফিরেছিলেন ধারাভাষ্যকার আল্পার বাকিরচিগিল। নাম নিয়েছিলেন নিজ দেশের কিংবদন্তি হাকান সুকুরের। এতেই বাধল বিপত্তি, চাকরি খোয়ালেন তিনি।
২০০২ বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ১১ সেকেন্ডে গোল করেছিলেন সুকুর। যা আজও বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম গোল। বাকিরচিগিল জিয়েশ গোলের পর প্রসঙ্গ ক্রমেই ফিরেছিলেন ২০ বছর আগে। জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপে এটিই সবচেয়ে দ্রুততম গোল নয়, সবচেয়ে দ্রুততম গোল আমাদের তুরস্কের সুকুরের।
সুকুরের নাম নেওয়ার পর পরই ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে বরখাস্ত করা হয় বাকিরচিগিলকে। কেন এমন সিদ্ধান্ত? আসলে তুরস্কে 'হাকান সুকুর' এই শব্দ দুটি বলাই নিষিদ্ধ করে রেখেছেন রিসেফ তাইপে এরদোয়ানের সরকার।
ইন্টার মিলানের হয়ে এক সময় আলো কাড়া সুকুরকে ডাকা হতো 'বসফরাসের ষাঁড়' হিসেবে। বক্সের ভেতর ক্ষিপ্রতা আর গোল করার দক্ষতায় সুনাম কুড়িয়েছিলেন তিনি। তুরস্কের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৫১ গোলের মালিকও তিনি। খেলা ছাড়ার পর সুকুর যোগ দেন রাজনীতিতে। ২০১১ সালে তাইপের দল থেকেই নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য হিসেবে।
এরপর ঘটনা চক্রে এরদোয়ান সরকারের কড়া সমালোচক হয়ে যান তিনি। বিভিন্ন নীতির বিরোধিতা করতে থাকেন। ২০১৩ সালে দল থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র সদস্য হিসেবে ভূমিকা রাখছিলেন সংসদে। ২০১৬ সালে এরদোয়ানকে সমালোচনা করে একটি টুইট করেই বিপদে পড়েন তিনি। তার বিরুদ্ধে জারি করা হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, যুক্তরাষ্ট্রে পরে পালিয়ে যান তিনি। এক সময়ের ফুটবল তারকাকে পরে ক্যালিফোর্নিয়ার ট্যাক্সি চালাতেও দেখা যায়।
২০১৭ সাল থেকে তুরস্কের সকল গণমাধ্যমে সুকুরের নাম নেওয়া নিষিদ্ধ করে এরদোয়ানের সরকার। সেটা ফুটবল খেলার প্রসঙ্গেও, তা হয়ত বুঝতে পারেননি ধারাভাষ্যকার বাকিরচিগিল।
Comments