মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ড্রোন ব্যবহৃত হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত। ছবি: এএফপি

মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। এজন্য কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশনে একটি অত্যাধুনিক ড্রোন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকেও (বিজিবি) ড্রোন সমৃদ্ধ করা হচ্ছে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

কমিটির আগের বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ড্রোন ব্যবহার করা যায় কী না, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছিল। আজকের বৈঠকে ওই সুপারিশের অগ্রগতি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সীমান্ত নজরদারি এবং সার্বিকভাবে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিজিবি-তে ড্রোন সংযোজনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান।

এতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এ বছরের জুন মাসে দুটি অত্যাধুনিক ও উন্নত ফিচার সমৃদ্ধ ফটোগ্রাফি ড্রোন উইথ অ্যাসোসিয়েটেড অ্যাক্সেসরিজ কিনেছে। বর্তমানে একটি ড্রোন ভাসানচরে এবং অন্যটি বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কোস্টগার্ড স্টেশন সেন্টমার্টিনে মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ বলেন, 'আমরা সীমান্তে ড্রোন দিয়ে নজরদারি করার সুপারিশ করেছিলাম। মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে একমত আছে। বর্তমানে ভাসানচরসহ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় ড্রোন নজরদারি চলছে। বিজিবির মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি করা হবে বলেও জানিয়েছে।'

কমিটির আগের বৈঠকে সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, পীর হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমার ভূখণ্ডে নিয়মিত গোলাগুলি ও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মর্টার শেল পড়ার প্রসঙ্গ তুলেন।

সুলতান মনসুর বলেন, 'এই ঘটনার জন্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী জনসাধারণের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পর্যটকরাও ওই অঞ্চলে যেতে ভয় পাচ্ছেন।'

তিনি আপোষ চিন্তা বাদ দিয়ে কাউন্টার গুলির মাধ্যমে নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দেওয়ার কথা বলেন।

পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এখন মিয়ানমার সীমান্ত থেকে কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।'

মন্ত্রী মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ারও আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার আকাশে সকাল-সন্ধ্যায় ড্রোন ও হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ড্রোন ও হেলিকপ্টারে টহল দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি বাংলাদেশের তরফ থেকে মিয়ানমার সরকারকে জানানোও হয় এবং নভেম্বরে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত ২ দেশের সীমান্ত সম্মেলনের আলোচনায় উঠে আসে। পরে ২ সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও সীমান্তবর্তী জনগণের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এবং বিভ্রান্তি এড়াতে মিয়ানমার তাদের ড্রোন, হেলিকপ্টার ও বিমান চলাচলের আগাম তথ্যসহ সীমান্তে গোলাগুলি-বিস্ফোরণ ও নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান পরিচালনার তথ্য আদান-প্রদান করতে সম্মত হয়েছে বলেও জানানো হয়।

ওই বৈঠকে র‌্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন শিশুদের বয়সসীমা কমানোর প্রস্তাব করেন।

তিনি বলেন, 'দেশের আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচের সবাইকে কিশোর হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে ১২-১৩ বছরের কিশোররা খুন, ধর্ষণসহ নানাবিধ অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে।'

র‌্যাবের ডিজি তার বক্তব্যে কিশোর হিসেবে গণ্য করার জন্য ১৮ বছরের বয়সসীমা আরও কমানোর পক্ষে মত দেন।

কমিটির আগের বৈঠকে ৩০০ ফুট (পূর্বাচল রোডে) এলাকায় ডাকাতি হয় উল্লেখ করে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বন্ধে ওই অঞ্চলের কাশবন ও জঙ্গল পরিষ্কার করার সুপারিশ করে। ওই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে কাশবনসহ জঙ্গল পরিষ্কার করে ডাকাতি বন্ধে টহল বাড়ানো হয়েছে বলেও আজ বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এদিকে, বৈঠকে ‍টুরিস্ট পুলিশ বা শিল্প পুলিশের আদলে একটি পূর্ণাঙ্গ সাইবার ক্রাইম ইউনিট খোলারও সুপারিশ করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Drug smuggling via air, land routes on the rise

This grim picture emerges as Bangladesh, like other countries around the world, observes the International Day Against Drug Abuse and Illicit Trafficking today.

13h ago