ক্রাইম পেট্রল দেখে শিশু আয়াতকে হত্যা করা হয়: পিবিআই

চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা এলাকা থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত নিখোঁজের ১০ দিন পর ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সাগরের যে অংশ মরদেহ ফেলা হয়েছিল, আজ সকালে ভাটার সময় সেখানে অভিযান চালায় পিবিআই। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা এলাকা থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত নিখোঁজের ১০ দিন পর ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পিবিআই মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করেছিল আবীর। একপর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। মরদেহ গুম করতে টুকরো করা হয় এবং প্যাকেটে মুড়িয়ে সাগর ও খালের ২টি জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় টিভি শো ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে হত্যাকাণ্ড ও আলামত লুকিয়ে ফেলার এমন নৃশংস ও ভয়ঙ্কর কৌশল রপ্ত করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে আবীর।'

পিবিআই মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, 'আবীরের উদ্দেশ্যে ছিল অপহরণ করে আয়াতের পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। এজন্য সে পরিকল্পনা করছিল। কয়েক মাস আগে রাস্তায় একটি সিম খুঁজে পায় আবীর। নতুন ফোন কিনে মুক্তিপণ দাবির জন্য সে মোবাইলে সিমটি ঢোকায়। কিন্তু সিমটি কাজ না করায় আর মুক্তিপণ চাইতে পারেনি।'

'সিসিটিভি ফুটেজে আবীরকে ২টি ব্যাগ নিয়ে যেতে দেখা যায়। পিবিআই কর্মকর্তারা তার মায়ের বাসায় গিয়ে ব্যাগ ২টি খোঁজেন। একটি ব্যাগ পেলেও অন্যটি পাননি। তখন তাদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবীরকে নিয়ে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আবীর,' বলেন ইলিয়াস।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানিয়েছে আবীর জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিতে চেয়েছিল। তার বাবা-মার মধ্যে সমস্যা আছে। আর বেকার থাকা অবস্থায় তার টাকার দরকার ছিল। সে সিএনজি কিনে তা দিয়ে ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেছিল।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে আবীরকে আটক করে হেফাজতে নেয় পিবিআই। শুরুতে জিজ্ঞাসাবাদে নানান তথ্য দিলেও একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশকে জানায় পিবিআই। এরপর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তার আরেক বন্ধু হাসিবকেও আটক করে পিবিআই। হাসিব চায়ের দোকানে কাজ করে।

পিবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুরে তাকে নিয়ে নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোড ও সাগরপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি ও শিশুটির পায়ের স্যান্ডেলসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু, শিশুটির মরদেহের টুকরোর খোঁজ এখনো মেলেনি।

পুলিশের ধারণা, মরদেহের টুকরোগুলো জোয়ার-ভাটায় সাগরে ভেসে গেছে।

জানা গেছে, নিহত শিশু আয়াত ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর বন্দরটিলা নয়ারহাট ওয়াজ মুন্সীর নতুন বাড়ির সোহেল রানার মেয়ে। সে স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাসা থেকে বের হয় আয়াত। তারপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ইপিজেড থানায় একটি জিডি করে তার পরিবার। 

আয়াতদের ভবনের নিচতলায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন রংপুরের আবীরের পরিবার। চলতি মাসের শুরুতে তার মা আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকায় আলাদা বাসা নেন। সেখানে মায়ের সঙ্গে আবীর থাকত।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

8h ago