আর্জেন্টিনার হারে জার্সি-পতাকা বিক্রেতাদের মাথায় হাত

আর্জেন্টিনার হারে জার্সি-পতাকা বিক্রেতাদের মাথায় হাত
ফার্মগেট এলাকায় জার্সি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে আগে বাদাম, তরকারি বিক্রি করতেন তিনি। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা শুরুর ১ সপ্তাহ আগে থেকে পতাকা বিক্রিতে নেমেছেন। বেচাবিক্রি চলছিল ভালোই। তবে গত মঙ্গলবার সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনা দলের পরাজয়ের পর বিক্রি নিয়ে আশঙ্কায় পড়েছেন হবিগঞ্জের হাবিবুর রহমান।

ফার্মগেট, আসাদগেট, সংসদ ভবন এলাকায় হেঁটে হেঁটে পতাকা বিক্রি করেন তিনি।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, '১০ দিন আগে ৩৫ হাজার টাকার পতাকা কিনেছি। এরমধ্যে ২০ হাজার টাকার আর্জেন্টিনার পতাকা। এগুলোর দাম ২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত।'

'আর্জেন্টিনার পতাকাই বেশি চলে। ১ সপ্তাহ ধরে দিনে ২৫-৩০টা করে পতাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু গতকাল আর্জেন্টিনার পরাজয়ের পর আজ রাত ৮টা পর্যন্ত মাত্র ৫টা বিক্রি হয়েছে। রাত ১১টা পর্যন্ত থাকব। তবে খুব বেশি বিক্রির সম্ভাবনা দেখছি না। আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে না পারলে আমি লোকসানে পড়ব,' বলেন তিনি।

তার সংগ্রহে থাকা পতাকাগুলোর মধ্যে আর্জেন্টিনার পতাকা সবচেয়ে বেশি। এরপরে রয়েছে ব্রাজিলের পতাকা। জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স, পর্তুগাল এসব দলের কিছু পরিমাণ পতাকা রয়েছে। বাংলাদেশের পতাকাও আছে।

গতকাল আর্জেন্টিনাকে হারানোর পর আজ সৌদি আরবের অল্প কিছু পতাকাও এনেছেন হাবিবুর।

'সৌদি আরব যদি সেকেন্ড রাউন্ডে ওঠে তাহলে আরও পতাকা আনব। অনেকেই বলছেন, হারলেও আর্জেন্টিনা, জিতলেও আর্জেন্টিনা। কিন্তু বেচা তো হচ্ছে না,' বলেন তিনি।

মঙ্গলবার আর্জেন্টিনা বনাম সৌদি আরব খেলা চলাকালীন টিএসসিতে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

একই ধরনের কথা বলেন কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ডের জার্সি বিক্রেতা আবদুল জলিল।

আগে ভ্যানে টিশার্ট বিক্রি করতেন তিনি। বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর ১ সপ্তাহ আগে থেকে জার্সি বেচা শুরু করেছেন।

তিনি বলেন, '১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে জার্সি বিক্রি শুরু করেছি। চাহিদা বেশি হওয়ায় আর্জেন্টিনার জার্সিই বেশি এনেছি। ৫০ হাজার টাকার শুধু আর্জেন্টিনার জার্সি এনেছি। বিভিন্ন সাইজের জার্সির দাম ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। বেচাবিক্রি ভালোই চলছিল। কিন্তু আর্জেন্টিনার হারের পর কমে গেছে। প্রতিদিন ৩০-৩৫টা বিক্রি হইতো। আজ সব দল মিলিয়ে ১০-১২টা বিক্রি হয়েছে।'

'আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে এইটুকু অন্তত ধারণা ছিল সবার। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত টিকে গেলে সেমিফাইনালে বেচাবিক্রি অনেক বাড়তো। কিন্তু এখন তো দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়াটাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর্জেন্টিনা সেকেন্ড রাউন্ডে উঠতে না পারলে বড় লস হবে,' বলেন তিনি।

তবে এখনো বেচাবিক্রি নিয়ে আশা দেখছেন মিরপুর ১০ নম্বর এলাকার পতাকা বিক্রেতা আমির হোসেন।

তিনি বলেন, 'প্রতিদিন প্রায় ১০০টির মতো আর্জেন্টিনার পতাকা বিক্রি করি। ব্রাজিলের পতাকা বিক্রি হয় ৮০-৯০টা। যেহেতু আর্জেন্টিনার খেলা আগে ছিল তাই বিক্রিও বেশি হয়েছে। ব্রাজিলের খেলার আগে এখন ব্রাজিলের পতাকাও বিক্রি হচ্ছে। আর্জেন্টিনার হারের কারণে কিছুটা কমছে। তবে আশা করছি আর্জেন্টিনা পরের খেলায় জিতবে। সেই সঙ্গে বেচাবিক্রিও বাড়বে। আর যদি সেমিফাইনাল পর্যন্ত যায় তাহলে প্রচুর বিক্রি হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Dengue cases see sharp rise in early July

Over 1,160 hospitalised in first 3 days, total cases cross 11,000

12h ago