ব্রাজিলের নির্বাচনের ফলকে চ্যালেঞ্জ জানালেন পরাজিত বলসোনারো

ব্রাজিলের নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থী জায়ের বলসোনারো। ছবি: রয়টার্স
ব্রাজিলের নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থী জায়ের বলসোনারো। ছবি: রয়টার্স

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো গত মাসে বামপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে নির্বাচনে হেরে গেলেও গতকাল দাবি করেছেন, কিছু ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ভোট বাতিল করা উচিৎ।

বলসোনারো দেশটির নির্বাচন কমিশনের কাছে এই দাবি জানান।

গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বলসোনারোর এই দাবিতে খুব একটা সুবিধা হবে না বলেই ভাবছেন বিশ্লেষকরা, কারণ ইতোমধ্যে লুলার বিজয়কে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির নির্বাচনী আদালত (সুপেরিয়র ইলেক্টোরাল কোর্ট বা টিএসই)। একইসঙ্গে দেশটির শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক মিত্ররাও এই ফল মেনে নিয়েছেন।

তবে বলসোনারোর এই দাবিতে ছোট আকারে চলতে থাকা বিক্ষোভ কর্মসূচি গতিশীল হতে পারে বলে ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।

বলসোনারোর দাবির বিপরীতে টিএসইর নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আলেকজান্দ্রে দে মোরায়েস একটি রুলিং জারি করেছেন। এই রুলিং অনুযায়ী, বলসোনারোর দলকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গত মাসের ভোটের উভয় রাউন্ডের পূর্ণাঙ্গ অডিট প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এর অন্যথা হলে তিনি বলসোনারোর ডানপন্থী জোটের দাবি নাকচ করে দেবেন।

নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ আসার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ব্রাজিলের মুদ্রার দর পড়ে যায়। মার্কিন ডলারের বিপরীতে ব্রাজিলের রিলের দাম ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমে যায়। লুলার অর্থনৈতিক নীতিমালা ও ব্যয় পরিকল্পনা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আশংকার কারণে আগে থেকেই ব্রাজিলের মুদ্রা নড়বড়ে অবস্থানে ছিল।

লুলা'র ওয়ার্কার্স পার্টির (পিটি) সভাপতি গ্লেইসি হফমান বলসোনারোর অভিযোগকে 'কাপুরুষতার' সঙ্গে তুলনা করেন।

তিনি টুইটার বার্তায় বলেন, 'গণতন্ত্র ও সরকারি সংস্থাগুলোকে নিয়ে আর জল্পনাকল্পনা, দায়িত্বহীন আচরণ ও অপমান নয়। ভোটেই নির্বাচনের ফল নির্ধারিত হয়েছে এবং উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য ব্রাজিলে এখন শান্তি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।'

বলসোনারোর জোট জানিয়েছে, ৩০ অক্টোবরের দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের অডিটে তারা কিছু ইভিএমের ফলাফলে 'ঠিক করা সম্ভব নয় এ ধরনের কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির চিহ্ন' খুঁজে পেয়েছেন।

বলসোনারোর পক্ষে এখনও চলছে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
বলসোনারোর পক্ষে এখনও চলছে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

বলসোনারোর মিত্ররা আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বলেন, 'কিছু পুরনো মডেলের ভোটিং মেশিনে গুরুতর পর্যায়ের কারিগরি ত্রুটি দেখা গেছে, যার ফলে ভোটের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে এবং একে অনুমোদন দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।' এই প্রেক্ষাপটে তারা এসব পুরনো মডেলের মেশিনের ভোটগুলোকে বাতিল করার দাবি জানান।

সাবেক সেনা অধিনায়ক বলসোনারো বেশ কয়েক বছর ধরে দাবি জানিয়ে এসেছেন, দেশটির ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থায় কারচুপির সুযোগ রয়েছে। তবে এই দাবির বিপরীতে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি।

বলসোনারো ৩০ অক্টোবরের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ৪৮ ঘণ্টা কোনো ঘোষণা দেননি। এমন কী, তিনি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে পরাজয় মেনে নেননি। তবে তিনি তার সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরুর অনুমোদন দেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্রাজিলের সবচেয়ে সরব রাজনীতিবিদ বলসোনারো গত ৩ সপ্তাহ জনসম্মুখে আসেননি বললেই চলে। বেশিরভাগ দিন তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক এজেন্ডা অনুসরণ করেননি এবং তেমন কোন বিবৃতি প্রকাশ করেননি।

 

Comments

The Daily Star  | English

US sends list of items, seeking zero duty

The US has demanded zero duty facility for a large number of its products from Bangladesh.

12h ago