বেলাবো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর: ‘ক্ষমা চেয়েছেন ২ ছাত্রলীগ নেতা’

নরসিংদীর বেলাবোর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুরের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নূর আসাদ-উজ-জামান।
লেখা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয় মানববন্ধন করেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর বেলাবোর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুরের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নূর আসাদ-উজ-জামান।

নূর আসাদ-উজ-জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুক্রবার সকালে হাসপাতালে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ও অন্যান্যদের উপস্থিতিতে তারা ক্ষমা চান।'

জেলা সিভিল সার্জন নূরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা। হাসপাতালে যে দরপত্র নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত, আমরা আজকের সভায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি সরকারি নিয়ম-নীতির বাইরে কিছুই হবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা সেটাই করব।'

আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বেলাব উপজেলা কমপ্লেক্স চত্বরে প্রবেশ করেন। এসময় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয় মানববন্ধন করেন হাসপাতালটির চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সভায় উপস্থিত থাকা কয়েকজন জানান, সভা শুরুর পর মন্ত্রী স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে ওই দিনের ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। পরে ছাত্রলীগের ২ নেতার বক্তব্য শোনেন। সব শুনে মন্ত্রী অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের ক্ষমা চাইতে বলেন। পরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক ভুল স্বীকার করে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষমা চান।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সভাপতি সারোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মন্ত্রী মহোদয়ের সামনে আমরা সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। বলেছি, আর কখনো এমন ভুল হবে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ভুল-বোঝাবুঝি শেষে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি।'

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক বলেন, 'সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি ছিল। আমরা নিজেদের দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি। আমাদের প্রতিপক্ষ গ্রুপ ঘটনাটি অতিরঞ্জন করে সবার সামনে প্রকাশ করেছে, যা কাম্য ছিল না।'

সভায় শিল্পমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন নূরুল ইসলাম, রায়পুরা-বেলাব সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা জান্নাত, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মেদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নরসিংদীর সভাপতি মোজাম্মেল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান খান এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক।

এর আগে, গত বুধবার সকাল ১১টার দিকে সারোয়ার হোসেন ও শাহরিয়ার তৌফিকের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক কর্মী হাসপাতালটির ভেতরে প্রবেশ করে হামলা ও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ওই দিন বিকেলে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামি করে বেলাব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি।

অভিযোগটি ৩ দিনে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করার বিষয়ে বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া লিখিত অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত ১৬ অক্টোবর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খাদ্য ও পথ্য সরবরাহ সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে অংশ নেন ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এসব দরপত্র বর্তমানে মূল্যায়ন কমিটির যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় আছে। কিন্তু, দরপত্র অন্য কেউ পাচ্ছেন এমন খবরে হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর চালায় ছাত্রলীগ।

আজকের সভায় শিল্পমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- সিভিল সার্জন নূরুল ইসলাম, রায়পুরা-বেলাব সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা জান্নাত, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মেদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নরসিংদীর সভাপতি মোজাম্মেল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান খান এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

8h ago