বাগেরহাটে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে হত্যা পরিকল্পিত, অভিযোগ বিএনপির

বাগেরহাটে বাসাবাটি এলাকায় তানু ভুঁইয়ার বাড়ির সামনে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: স্টার

বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম তানু ভুঁইয়াকে (৩৭) গুলি করে হত্যার ২০ ঘণ্টা পরও মামলা হয়নি। হত্যায় জড়িত সন্দেহে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এই অবস্থায় স্থানীয় বিএনপির নেতারা বলছেন, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

এদিকে আজ দুপুর ২টায় বাসাবাটি এলাকায় তানু ভুঁইয়ার বাড়ির সামনে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় শহরের পুরাতন বাজার মোড় এলাকায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে সরুই কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নুরে আলমকে হত্যার প্রতিবাদে আজ দুপুরে পুরাতন বাজার মোড়ে ঝটিকা মিছিল করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এর আগে দুপুর ১টার দিকে মরদেহ হস্তান্তরের সময় হাসপাতাল গেটে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মিছিল শেষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। দেশব্যাপি বিএনপির সাহসী নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। এটা তারই ধারাবাহিকতা।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনিন্দ ইসলাম অমিত বলেন, আমরা দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধাকে হারিয়েছি। বিএনপি তার পরিবারের পাশে থাকবে। নিরপেক্ষ থেকে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান বলেন, নুরে আলম তানু ভুঁইয়া একজন রাজনৈতিক সাহসী যোদ্ধা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে তিনি কয়েকবার কারাবরণ করেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সাহসী যোদ্ধাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যাতে কথা না বলতে পারে এবং নেতাকর্মীদের মাঝে ভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, যারা হত্যা করেছে তাদের নাম প্রশাসনের কাছে রয়েছে। এর আগেও তানু ভুঁইয়াকে হত্যার জন্য গুলি করা হয়েছিল। এই হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও কঠিন শাস্তির দাবি জানান জেলা বিএনপির এই সাবেক নেতা।

স্বেচ্ছাসেবক দলের খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গালিব ইমতিয়াজ নাহিদ বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

নিহতের বোন রুপা জানান, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে বগা ক্লিনিকের দিকে গিয়েছিলেন তানু। কিছুক্ষণ পরেই পরপর চারটা গুলির শব্দ পাই। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা আমার ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি চাই।

তিন দিনের কর্মসূচি সম্পর্কে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শান্ত বলেন, সোমবার জেলার প্রতিটি ইউনিটে দোয়া ও আলোচনা সভা। মঙ্গলবার জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। তৃতীয় ও শেষ দিন বুধবার প্রতিটি উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হবে। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের গণমাধ্যম শাখার সমন্বয়ক পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা করছে। হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি পদ্মপুকুর মোড় এলাকায় গুলিতে নিহত হন নুরে আলম তানু ভুঁইয়া। তিনি বাগেরহাট জেলা ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

4h ago