দক্ষিণ উপকূলে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, সিউলের পাল্টা জবাব

উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার দৃশ্য টেলিভিশনে দেখছেন দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ। ছবি: রয়টার্স

প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। সিউল 'আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য' ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে।

আজ বুধবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে জানা গেছে।

আজ সকালের এই ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী ও জাপানের উপকূলরক্ষা বাহিনী চিহ্নিত করে। একটি ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে পড়ে।

এর কয়েক ঘণ্টা পর দক্ষিণ কোরিয়া ২ দেশের সমুদ্রসীমার কাছাকাছি জায়গায় উড়োজাহাজ থেকে ৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে পাল্টা জবাব দেয়।

পিয়ংইয়ং দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়াটি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধের দাবি করেছে। উত্তর কোরিয়ার মতে, 'এ ধরনের পেশীশক্তির প্রদর্শনী ও উসকানি আর মেনে নেওয়া যায় না।'

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার একটি ক্ষেপণাস্ত্র এমন জায়গায় আঘাত হেনেছে, যেটি ২ কোরিয়ার অনানুষ্ঠানিক সমুদ্রসীমা হিসেবে বিবেচিত।

১৯৫৩ সালে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে কোরিয়া যুদ্ধের অবসানের পর এবারই প্রথম এমন ঘটনা ঘটলো।

জেসিএস জানিয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া 'খুবই অস্বাভাবিক এবং তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়'। তারা এর 'সমুচিত জবাব' দেবে বলেও জানায়।

উত্তর কোরিয়ার ওনসান এলাকা থেকে স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫১ মিনিটে নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেসিএস। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ কোরিয়ার উললেউং দ্বীপে সতর্কতাসূচক সাইরেন বাজানো হয়।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডাকেন। এই 'নজিরবিহীন' ঘটনার নিন্দা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিউলে হ্যালোউইন অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে ১৫৬ জন নিহতের ঘটনায় দেশটিতে যখন রাষ্ট্রীয় শোক চলছে তখন পিয়ংইয়ং এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লো।

এ বছর উত্তর কোরিয়া অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি সংখ্যায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। আগের রেকর্ডটি ছিল ২০১৯ সালে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দেশটি শিগগির পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাবে।

জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা সর্বশেষ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

সাংবাদিকদের হামাদা বলেন, 'বেইজিংয়ের কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানানো হয়েছে।'

পিয়ংইয়ংয়ের দাবি, তাদের 'আত্মরক্ষার' জন্য এ ধরনের অস্ত্র জরুরি এবং সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলো সিউল ও ওয়াশিংটনের যৌথ সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে সতর্ক বাণী। উত্তর কোরিয়ার দৃষ্টিতে, এই মহড়া তাদের ওপর হামলার পরিকল্পনার অংশ।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন গতকাল মঙ্গলবার বলেন, 'উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব রাখা হলে তারা সাড়া দেয় না। আমাদের মিত্রদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ অব্যাহত রাখবো, যাতে উত্তর কোরিয়ার অবৈধ অস্ত্র প্রকল্প আর সামনে এগোতে ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকিতে ফেলতে না পারে।'

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

10h ago