নাটোরে দুর্নীতির অভিযোগে কৃষি প্রণোদনা সামগ্রী বিতরণ স্থগিত

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বাড়াতে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় ১০০ কৃষককে বিনামূল্যে প্রণোদনা সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় তা স্থগিত করা হয়েছে।
নাটোর-কৃষি-প্রণোদনা-সামগ্রী
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় ১০০ কৃষককে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় তা স্থগিত করা হয়েছে। ছবি: স্টার

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বাড়াতে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় ১০০ কৃষককে বিনামূল্যে প্রণোদনা সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় তা স্থগিত করা হয়েছে।

নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল এই কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেন।

গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে পেঁয়াজ চাষের প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় কৃষকরা তার কাছে অভিযোগ করেন যে, বরাদ্দকৃত উপকরণ ঠিকমতো না দিয়ে কৃষি কর্মকর্তারা দুর্নীতি করেছন।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বরাদ্দের তালিকা ও বিতরণ সামগ্রীর মধ্যে তারতম্য দেখে তিনি তাৎক্ষণিক বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করতে বলেন।

বরাদ্দের তালিকা অনুসারে, একজন কৃষক এক কেজি পেঁয়াজ বীজ, ২০ কেজি ডিএপি, ২০ কেজি এমওপি সার, ১০০ টাকার বালাইনাশক এবং জমি প্রস্তুতি, সেচ ও বাঁশের বেড়া তৈরিতে বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার ৮০০ টাকা পাবেন। সেই সঙ্গে ২ হাজার ১০০ টাকার পলিথিন ও ১৫০ টাকার নাইলনের সুতা দেওয়ার কথা আছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও পেঁয়াজ চাষি নিবীরা খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বরাদ্দের ২ হাজার ১০০ টাকার পলিথিনের বদলে দিয়েছেন বড়জোর ৫০০ টাকার পলিথিন। ১৫০ টাকার নাইলনের সুতার বদলে দিয়েছেন ৬০ টাকার প্যারাসুট সুতা।'

'কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকের জন্য বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন,' অভিযোগ করে তিনি জড়িতদের বিচার দাবি করেন।

ফাগুয়ারদিয়া ইউনিয়নের কৃষক শামসুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বীজতলা তৈরিতে যে মানের দড়ি ও পলিথিন প্রয়োজন, তা আমাদের দেওয়া হয়নি। বরাদ্দে কী আছে আমাদের জানানো হয়নি। যা দিয়েছে তাই নিয়ে যাচ্ছিলাম। পরে কৃষি কর্মকর্তারা সব উপকরণ ফেরত নিয়েছেন।'

অভিযুক্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান আলী ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। তার দাবি, ২ দিন আগে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ায় তিনি প্রণোদনার সামগ্রী বিতরণের বিষয়ে অন্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

কোন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল?—সংসদ সদস্য জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কৃষি কর্মকর্তা।

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া মমতাজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চাষিদের ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। নিম্নমানের উপকরণ ফেরত দিয়ে নতুন উপকরণ কেনা হবে। মান যাচাইয়ের পর তা বিতরণ করা হবে।'

সংশ্লিষ্ট সূত্র ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, সার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে হাসান আলীর শাস্তিমূলক বদলি হয়েছিল। পরে তা বাতিল করে তাকে নাটোরে বদলি করা হয়। নতুন কর্মস্থলে এসেই তিনি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন, মন্তব্য কৃষকদের।

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিব্রত হয়েছি। চাষিরা খালি হাতে ফিরে গেছেন। জড়িত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছি।'

Comments