‘সরকারি দলের লোকেরাই বেহেশতে আছেন, দেশের মানুষ যেন দোযখে জ্বলছে’

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, যারা সরকারি দল করেন শুধু তারাই বেহেশতে আছেন। দেশের মানুষ যেন দোযখে জ্বলছে।
জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ছবি: ফাইল ফটো

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, যারা সরকারি দল করেন শুধু তারাই বেহেশতে আছেন। দেশের মানুষ যেন দোযখে জ্বলছে।

আজ শনিবার উত্তরখান কলেজিয়েট স্কুল মাঠে থানা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, দেশের বেশির ভাগ মানুষ টাকার অভাবে বাজার করতে পারছে না, আর একটি অংশ দেশে টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। তারা হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা নেই, মৌলিক অধিকার নেই মানুষের। কিন্তু হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়নের নামে লুটপাট চলছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্প গ্রহণ হচ্ছে। একটি প্রকল্পও সময় মতো শেষ হচ্ছে না। এতে প্রমাণ হয়, প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাই সঠিকভাবে হচ্ছে না। তাই সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে, ব্যয়ের পরিমাণ। এতে প্রকল্পগুলো কখনোই লাভজনক প্রকল্প হতে পারবে না। যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার নেই, সেখানে শুধু লুটপাটের জন্যই মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। মেগা প্রকল্প মানেই মেগা লুটপাট।'

উত্তরখান থানা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান আলালের সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর উত্তর আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহবায়ক শেরিফা কাদের।

জিএম কাদের বলেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনই প্রমাণ করে, কর্তৃত্ববাদী কোনো সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন চাইলেও, সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। সরকার ও সরকারি দলকে খুশি করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন অনিয়মকেই নিয়মে পরিণত করে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, শুরু থেকেই আমরা ইভিএম-এ নির্বাচনের বিরোধীতা করছি। কারণ, ইভিএম-এ ঘোষিত ফলাফল চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব হয় না। কোনো প্রার্থী সংক্ষুব্ধ হলে, কোনো প্রমাণ নিয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন না। আবার, যারা নির্বাচন পরিচালনা করেন, সেই মাঠ প্রশাসন সরকারের আনুকূল্য পেতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন এর দোষ না থাকলেও, যারা যারা ইভিএম পরিচালনা করেন তারা তো নিরপেক্ষ নয়। তাই কর্তৃত্ববাদী কোনো সরকারে অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবার সুযোগ নেই।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ভয়াবহ লোডশেডিং-এ নাকাল দেশ। ডলারের অভাবে জ্বালানি তেল কিনতে পারে না দেশ। তাই চাহিদা মতো বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারছে না সরকার। কলকারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে রফতানি শিল্প। বৈদেশিক মুদ্রা আয় হুমকির মুখে পড়েছে। কর্মহীন হয়ে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে। ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা বলে, সরকার ঘরে ঘরে বেকার সৃষ্টি করেছে। মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। এতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না অভিভাবকরা। এভাবে চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম পুষ্টিহীন জাতিতে পরিণত হবে। মানুষ বাজার করতে পারছে না, বাজারে যেন আগুন লেগেছে। বাজারের আগুনে পুড়ছে কোটি কোটি পরিবার। টাকার অভাবে মানুষ চিকিৎসা করতে পারছে না, ওষুধ কিনতে পারছে না।

Comments

The Daily Star  | English

Six state banks asked to cancel contractual appointments of MDs

The Financial Institutions Division (FID) of the finance ministry has recommended that the boards of directors of six state-run banks cancel the contractual appointment of their managing directors and CEOs..The six state-run banks are Sonali Bank, Janata Bank, Agrani Bank, Rupali Bank, BAS

49m ago