মৃত্যুর আগে কলকাতায় কিশোর কুমার বলেছিলেন, 'হয়তো এটাই শেষ আসা’
মৃত্যুর ৩ মাস আগে কলকাতায় গাইতে গিয়ে কিশোর কুমার বলেছিলেন, 'হয়তো কলকাতায় এটাই আমার শেষ আসা।' ওই অনুষ্ঠানেই 'ওপারের ডাক যদি আসে, শেষ খেয়া হয় পাড়ি দিতে' গানটি গাওয়ার সময় বেদনা ঝরেছিল কিশোর কুমারের কণ্ঠে। অনুষ্ঠানের শেষ গান হিসেবে গেয়েছিলেন 'আমি যে কে তোমার তুমি তা বুঝে নাও'।
এই ৩টি বেদনার গান গাওয়ার ৩ মাস পরই ১৯৮৭ সালে ১৩ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তী শিল্পী। কলকাতায় গিয়ে যেন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, বিদায় আসন্ন।
কোনো কোনো শিল্পীর কোনো মৃত্যু হয় না। দেহত্যাগ করলেও তাদের সৃষ্টি বেঁচে থাকে বহু বছর। এমনই একজন ছিলেন তিনি।
কিশোর ছিল তার ডাক নাম। ভালো নাম আভাস কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। 'বম্বে টকিজ' ছবিতে দাদা অশোক কুমারের সঙ্গে গান গেয়েছিলেন কিশোর। সেই নামটাই শেষ পর্যন্ত থেকে যায়।
সংগীতে প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও কেএল সায়গলকে নিজের সবচেয়ে বড় আদর্শ মানতেন তিনি। ১৯৪৮ সালে 'জিদ্দি' ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করেন।
তবে শুধু গান নয়, অভিনেতা হিসেবেও তিনি যে পারদর্শী, তা প্রমাণ করেছিলেন কিশোর কুমার। 'শরারত' ও 'রাগিনী' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তার লিপে গান গেয়েছিলেন মহম্মদ রফি।
কিশোর কুমারের বিপরীতে বৈজন্তিমালা, মধুবালা ও সায়রা বানুর মতো অভিনেত্রীরা কাজ করেছেন।
কিশোর কুমার ৮ বার ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তার গাওয়া গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, উত্তম কুমার, রাজেশ খান্না, সঞ্জীব কুমারসহ আরও অনেক প্রখ্যাত অভিনেতা।
শচীন দেববর্মণ, রাহুল দেববর্মণ, গুলজার, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, পুলক বন্দ্যোপাধ্য়ায়সহ আরও অনেক সংগীত পরিচালক, গীতিকারদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।
কিশোর কুমারের প্রথম স্ত্রী রুমা গুহঠাকুরতা। ১৯৬০ সালে তিনি মধুবালাকে বিয়ে করেন। ১৯৬৯ সালে মধুবালার মৃত্যু হলে ১৯৭৬ সালে অভিনেত্রী যোগিতা বালিকে বিয়ে করেন। সেই বিয়ে ২ বছর টিকেছিল। সবশেষে লীনা চন্দভারকারকে বিয়ে করেন কিশোর কুমার। আমৃত্যু একসঙ্গে ছিলেন তারা।
১৯২৯ সালের ৪ আগস্ট মধ্যপ্রদেশে এক বাঙালি পরিবারে জন্ম নেন কিশোর কুমার।
Comments