রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আকাশ প্রতিরক্ষার দিকে নজর ইউক্রেনের

অত্যাধুনিক মার্কিন বিমান হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ফাইল ছবি: রয়টার্স
অত্যাধুনিক মার্কিন বিমান হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়া গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর গতকাল দেশটিতে সবচেয়ে বড় আকারের হামলা চালিয়েছে। সোমবার সকাল থেকে ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশের লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে।

জরুরি সেবাদানকারী সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স আজ মঙ্গলবার জানিয়েছে, এসব হামলায় ১৪ জন নিহত ও ৯৭ জন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিয়েভ, লিভিভ, তের্নোপিল, ঝিতোমির, দিনিপ্রো, ক্রেমেনচুক, ঝাপোরিঝঝিয়া ও খারকিভে হামলা হয়েছে।

এ সময় একযোগে আকাশ, ভূমি ও সমুদ্র থেকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।

হামলার কারণে ইউক্রেনের বেশ কিছু অংশে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ছবি: রয়টার্স
হামলার কারণে ইউক্রেনের বেশ কিছু অংশে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ছবি: রয়টার্স

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী সেতুর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ আনেন এবং এর প্রতিক্রিয়ায় 'বড় আকারের' দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্দেশ দেন।

তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি, এই আক্রমণের মাত্রা থেকে ধারণা করা যায়, আরও আগে থেকেই এই হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।

সোমবার হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন। পরবর্তীতে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে জানান, '২ দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রথম প্রাধান্যের বিষয় এখন বিমান হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা।'

সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে রাখা বক্তব্যে জেলেনস্কি বলেন, 'আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে যা প্রয়োজন, তার সবই আমরা করব। আমরা শত্রুর জন্য যুদ্ধক্ষেত্রকে আরও বেশি কষ্টদায়ক করে তুলব।'

রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স
রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স

এ ছাড়া জেলেনস্কিকে অত্যাধুনিক বিমান হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বাইডেন। পেন্টাগন জানিয়েছে, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে কিয়েভের কাছে অত্যাধুনিক সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পাঠানো শুরু হবে। এই ব্যবস্থা চালু হতে ২ মাসের মতো সময় লাগতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ জানান, ইউক্রেনকে আরও সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগে যুদ্ধের পরিধি বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

আন্তোনভ গণমাধ্যমকে বলেন, 'এ ধরনের সহায়তা এবং কিয়েভকে গোপন তথ্য, প্রশিক্ষক ও যুদ্ধ কৌশল দিয়ে সহায়তা করার অর্থ হচ্ছে- যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়া এবং রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়ানো। '

জেলেনস্কি দাবি করেছেন, সোমবারের হামলার উদ্দেশ্য ছিল হত্যাকাণ্ড চালানো ও ইউক্রেনের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা ধ্বংস করা।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মাইহাল জানান, ৮টি প্রদেশের ১১টি মূল অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় রাশিয়া। ফলে ইউক্রেনের বেশ কিছু অংশে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ। তিনি দ্রুত এসব সেবা আবারও চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন।

বিদ্যুৎ সংকটের মোকাবিলায় ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিদ্যুৎ রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। ইতোমধ্যে ইউরোপের দেশগুলোতে জ্বালানির মূল্য আকাশ ছাড়িয়েছে, যার ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং শিল্প খাতের ওপর প্রভাব পড়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়া অন্তত ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেন ৪৩টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৩টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি জানিয়েছে।

রুশ রিজার্ভ সেনারা ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছেন। ছবি: রয়টার্স
রুশ রিজার্ভ সেনারা ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছেন। ছবি: রয়টার্স

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে।

এ ঘটনায় রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে উভয় পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

Comments

The Daily Star  | English

Grim discovery: Five bodies found on vessel in Meghna, 2 more die later

The incident had occurred on the Meghna river under Chandpur Sadar upazila in an area adjacent to Shariatpur

2h ago