কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্টের জন্য প্রশ্নফাঁস হতে পারে: তদন্ত কর্মকর্তা

কুড়িগ্রাম
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্টের জন্য প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

তিনি আজ শনিবার দুপুরে ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আদালত আগামি ২৯ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে শুনানি করবেন।

স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বরাতে ওসি বলেন, 'প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান স্কুলে কোচিং ব্যবসা চালাতেন বলে জানতে পেরেছি। তার কোচিংয়ের শিক্ষার্থীরা যেন ভালো ফলাফল করতে পারে সেজন্য তিনি প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। কোচিং ব্যবসার সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষকও জড়িত রয়েছেন।'

জানতে চাইলে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক শনিবার দুপুরে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্কুলে কোচিং ব্যবসা চালু না করতে তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল কিন্তু তিনি তা শোনেননি। তিনি তার পছন্দের কয়েকজন শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে কোচিং ব্যবসা শুরু করেন।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলটির কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষার্থী ডেইলি স্টারকে জানান, তারা বাধ্যতামূলকভাবে প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানের কোচিংয়ে পড়তেন। তিনি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষেই কোচিং চালাতেন। হাতে লেখা প্রশ্নপত্র পেয়ে তারা ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা দেন। অন্য বিষয়ের প্রশ্নও তাদের কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল।

এদিকে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক ও পিয়নকে গ্রেপ্তার করা হলেও এখনো পলাতক রয়েছেন অফিস সহকারী আবু হানিফ।

মঙ্গলবার রাত থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইলটিও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুরে ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই স্কুলের অফিস সহকারী আবু হানিফকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ সম্ভাব্য সব স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।'

পুলিশ জানায়, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার কারণে ভুরুঙ্গমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও দীপক কুমার দেব শর্মাকে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের দায়িত্ব অবহেলার বিষযটি খতিয়ে দেখছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনা উচিত। পরীক্ষা কমিটির দায়িত্ব অবহেলার কারণে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্নফাঁসের কারণে পরীক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের নতুন করে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

3h ago