কুড়িগ্রামে প্রশ্নফাঁস: দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে ৪ বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় পরপর ২ দিন চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হওয়ার ঘটনায় দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড ৪ বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করেছে। বিষয়গুলো হলো গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান ও রসায়ন।
আজ বুধবার দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুল ইসলাম বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থগিত করা বিষয়গুলোর পরীক্ষার তারিখ যথাসময়ে জানানো হবে। স্থগিত করা বিষয়গুলো ছাড়া অন্য সব বিষয়ের পরীক্ষা রুটিনে উল্লেখিত সময়সূচি অনুযায়ী যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় গত সোমবার ও মঙ্গলবার ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে। ভূরুঙ্গামারী সদরের ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে প্রশ্নফাঁসের এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
সূত্র আরও জানায়, সোমবার ও মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর আগেই কেন্দ্রের বাইরে প্রশ্নের অনুলিপি পাওয়া যায়, যার সঙ্গে বোর্ডের প্রশ্নপত্রের পুরোপুরি মিল পাওয়া গেছে।
প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ পেয়ে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম, সচিব অধ্যাপক মো. জহির উদ্দিন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলমসহ সংশ্লিষ্টরা ভূরুঙ্গামারী যান এবং স্থানীয় পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কথা বলেন।
সূত্র বলছে, কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এই প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে। এর পেছনে একটি চক্র জড়িত। এ ঘটনায় আমরা মামলা করেছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এ ঘটনায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানসহ ৩ শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নের হুবহু মিল আছে। যেহেতু পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই প্রশ্নের অনুলিপি পাওয়া গেছে, সেহেতু কেন্দ্রের শিক্ষক এমনকি শিক্ষা বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তারাও এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজহার আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী পরীক্ষার ট্যাগ অফিসার হিসেবে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
ভূরুঙ্গামারী থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ডেইলি স্টার বলেন, 'প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ৪ জনের নাম ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানসহ ৩ শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ তাদেরকে আদালতে পাঠানো হবে।'
Comments