সাফ শিরোপা জয়ে পাহাড়ে উল্লাস, মিষ্টিমুখ

ছবি: সংগৃহীত

'প্রথম ১৪ মিনিটে গোলটা আমার মেয়ে পাস করে, গোল হওয়ার পর সবাই লাফিয়ে উঠলাম। পুরো বাড়ি যেন উল্লাসে ফেটে পড়ছিল।'

নারী ফুটবল দলের মনিকা চাকমার বাবা বিন্দু কুমার চাকমা দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান।

খাগড়াছড়ি জেলায় লক্ষীছড়ি উপজেলায় সুমন্ত পাড়ার এই বাসিন্দা বলেন, 'সারাদিন খেলা দেখার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। খেলার শুরু আগেই আত্মীয়স্বজন পাড়া-প্রতিবেশিরা বাসায় হাজির হয়।' 

স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সাফের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এই জয়ে খুশির বন্যা বইছে সবুজ পাহাড়ের চায়ের দোকান ও অলিতে-গলিতে।

অন্য দুই ফুটবলার আনাই মগিনী ও আনুচিং মগিনীর বাড়িও  একই উপজেলার ভাইয়া পাড়ায়। তাদের বাবা রিপ্রু মগ বলেন, 'জাতীয় দলে আমার দুই মেয়ে খেলেছে এটার চাইতে বড় অর্জন আর আনন্দের আর কিছুই হতে পারে না। আমি গতকাল বন্ধুদের সঙ্গে গ্রামের দোকানে বসে সবাই মিলে খেলা দেখেছি। জেতার পর মিষ্টি বিতরণ করেছি।'

অন্যদিকে রাঙ্গামাটি জেলায় ঘগড়া মগাছড়ি গ্রামে রুপনা চাকমা ও ঋতুপর্ণা চাকমার মা বসুমতি চাকমা বলেন, 'তাদের অর্জনে ভীষণ খুশি। আমার ছোট মেয়েটি বাংলাদেশের জন্য কিছু অবদান রেখেছে এটা আমার জন্য গর্বের। তাকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে যারা সাহায্য করেছে তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, বিশেষ করে বীরসেন চাকমাকে। দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানাই তাকে যেন সবাই আশীর্বাদ করে।'

এদিকে দুই জেলার নারী ফুটবলারদের এমন জয়জয়কারে ইতোমধ্যেই খাগড়াছড়ি জেলার তিন খেলোয়াড় ও একজন সহকারী কোচের এবং রাঙ্গামাটি জেলার ২ খেলোয়াড়ের জন্য পুরষ্কার ঘোষণা করেছে দুই জেলা প্রশাসক। 

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি নিজেই গোলকিপার রুপনা চাকমার বাসায় গিয়েছি। তার মায়ের হাতে দেড় লাখ টাকার চেক তুলে দিয়েছি। এত দূর্গম এলকায় থেকে বেড়ে উঠা অনেক সংগ্রামের। প্রতিকূল পথ পাড়ি দিয়ে তারা জাতীয় দলে চান্স পেয়েছে। এটি একটি বিরাট অর্জন।' 

'ওরা একটা জেনারেশন তৈরি করছে যারা তাদের দেখাদেখি উৎসাহ পাবে। যেমন, সাকিব তামিমরা দেখিয়েছে। ঋতুপূর্ণা ও রুপনা চাকমা দুজনই ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। সেখানে ফুটবল কোচ শান্তি মনি চাকমার তত্ত্বাবধানে আরও ৩০ জন ছাত্রী আছে। তাদের প্রত্যেককে গত মাসে একটা করে ফুটবলের বুট কিনে দিয়েছি। তাদের প্রতিভা আছে। তাদের প্রতিভা বিকাশ ও লালনপালনের দায়িত্ব আমাদের সবার। আমি তাদের পাশে দাঁড়াতে পারাটাও সৌভাগ্যের বলে মনে করছি,' বলেন তিনি।

গতকাল শিরোপা জেতার পরপরই খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস  মনিকা চাকমা, আনুচিং মগিনী, আনাই মগিনী এবং সহকারী কোচ কৃষ্ণা চাকমাকে ১ লাখ টাকা করে মোট ৪ লাখ টাকা পুরষ্কার প্রদানের ঘোষণা দেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

3h ago