শিক্ষার্থী-কর্মচারীকে কামড় দেওয়ায় কুকুর পিটিয়ে হত্যা

ঢাকা কলেজ
ফাইল ফটো

ঢাকা কলেজের ভেতরে একটি কুকুরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় দোকানদারদের বিরুদ্ধে। কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীকে কামড় দেওয়ার অভিযোগ এনে গতকাল বুধবার দুপুরে কুকুরটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি গাড়ি ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে মৃত কুকুরটিকে নিয়ে যায়। ওই সময় আরও কয়েকটি জীবিত কুকুরকেও নিয়ে যাওয়া হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মেরে ফেলা কুকুরটি কলেজের ভেতর সাধারণত থাকে না। বাইরে থেকে এসেছিল। আমাদের ক্যাম্পাসে সব সময় ১০-১৫টি কুকুর থাকে। গতকাল বুধবার সকালে ওই কয়েকজন ছাত্র ও কর্মচারীকে কামড় দেওয়ায় স্থানীয় দোকানদার ও শিক্ষার্থীরা কুকুরটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।'

মৃত কুকুরের পাশাপাশি কয়েকটি জীবিত কুকুরকেও নিয়ে যাওয়া হয় সিটি করপোরেশনের গাড়িতে। ছবি: সংগৃহীত

তবে, দোকানদাররা প্রথমে কুকুরটিকে মারতে থাকেন এবং পরে হলের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ারের (প ফাউন্ডেশন) প্রতিষ্ঠাতা রাকিবুল হক ডেইলি স্টারকে জানান, 'ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি কুকুরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, এমন খবর পেয়েছি। কয়েকজনকে কামড় দেওয়ায় মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যারা কুকুরের কামড়ে আহত তাদের পাওয়া যায়নি। অনেক সময় এরকম বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কুকুর হত্যা করা হয়।'

তিনি জানান, ঢাকা কলেজে এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম। শিক্ষার্থীসহ আশেপাশের স্থানীয়দের এসব বিষয়ে সচেতনতা ও কাউন্সেলিং দরকার।

রাকিবুল হক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের গ্রুপে লিখেছেন, 'গতকাল ঢাকা কলেজের ছাত্ররা একজন কুকুরকে পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেছে। তার ব্যাপারে অভিযোগ আনা হয়েছে, সে কয়েকজনকে কামড়েছে। কুকুর যদি কামড়েই থাকে, সেক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের ভেট যদি নিশ্চিত করেন কুকুরটি জলাতঙ্ক আক্রান্ত, তাহলে তাকে মানবিক প্রক্রিয়ায় ইউথানেশিয়া করতে পারেন। কিন্তু ছাত্ররা পিটিয়ে মারার প্র্যাকটিসে হাত মকশো করলো একটা সভ্য সমাজে। আর গতকালের দায়িত্ব পালন না করে, আজ সুস্থ কুকুর তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কারা তুলে নিচ্ছে সেটা এখনো নিশ্চিত নই। মেরে ফেলা হচ্ছে নাকি, অপসারণ করা হচ্ছে সেই বিষয়ে কে জবাব দেবে?'

ঢাকা কলেজের নর্থ হলের হোস্টেল সুপার ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ওবায়দুল করিম ডেইলি স্টারকে জানান, কুকুরটি কয়েকজন শিক্ষার্থী ও কর্মচারীকে কামড় দিয়েছিল। আহতদের কলেজের গাড়িতে করে মহাখালী নিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এরপর সিটি করপোরেশনকে লিখিত ও মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানানো হয়।

তিনি জানান, ওই কুকুরটি আরও কয়েকটি কুকুরকে কামড় দিয়েছিল। এজন্য ঘটনার দিন কলেজ মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সবাইকে সাবধানে চলাফেরা করার জন্যও বলা হয়েছিল।

তবে কুকুরকে পিটিয়ে মেরে ফেলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago