‘মায়ের ডাক’ সদস্যদের ওপর মতাদর্শিক আক্রমণের নিন্দা, ১৯ নাগরিকের বিবৃতি

গুম প্রতিরোধ দিবস
গত ২৮ মে ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে একটি সমাবেশে ‘গুম’ হওয়া ব্যক্তিদের সন্তানরা। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সংগঠন মায়ের ডাক এই সমাবেশের আয়োজন করে। ছবি: স্টার

গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকের সদস্যদের ওপর মতাদর্শিক আক্রমণ করা হচ্ছে জানিয়ে এর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৯ নাগরিক।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সরকার-সমর্থিত গোষ্ঠীর মতাদর্শিক আক্রমণ এবং সংগঠনের সদস্যদের কলঙ্কিত করার অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিদাতারা বলেন, 'গত ১০ সেপ্টেম্বর মায়ের ডাকের একটি প্রেস বিবৃতিতে জানতে পারি সরকারি দলের সাথে নানাভাবে যুক্ত কিছু ব্যক্তি মায়ের ডাকের নারী সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্তা এবং কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।'

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আমরা আরও জানতে পারি যে, সরকার দলীয় অন্তত ৩ জন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মায়ের ডাকের কয়েকজন নারী সদস্যদের একটি ছবি ফটোশপ করে দুজন উর্দিপরা পুলিশ বসিয়ে কুরুচিপূর্ণ হেডিং যোগ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে।

'আমরা মনে করি যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কারণে, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে এদেশের নাগরিকদের গুম হওয়ার বিরুদ্ধে মায়ের ডাকের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের কারণে, সরকারের মদদপুষ্ট গোষ্ঠী এই মতাদর্শিক আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছেন। এটি গুমের ঘটনা থেকে দৃষ্টি সরানোর একটি কৌশলও বটে,' বিবৃতিতে বলেন তারা।

ইদানিংকালে একাধিক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রতিপক্ষ, বা সমালোচক, বা প্রতিবাদী কেউ, বা নিপীড়নে আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বা কলঙ্ক ম্যানুফ্যাকচার করে তাকে সমাজের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার, তাকে স্তব্ধ করার পথ বেছে নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিবৃতিদাতারা।

তারা বলেন, 'এই বিবৃতির মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদী নারী বা যেকোনো প্রতিবাদী কণ্ঠকে রুদ্ধ করার জন্য কেলেঙ্কারিকরণের এই রাষ্ট্রীয় কৌশলকে প্রতিহত করার তীব্র প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। একইসঙ্গে আমরা আশা করি যে পুলিশ বাহিনী যারা এদেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় চলে তারা তাদের সরকার-সমর্থক ভূমিকাকে পরিহার করতে উদ্যত হবেন এবং মায়ের ডাকের সদস্যদের বিরুদ্ধে যারা এই জঘন্য প্রচারণা চালাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।'

বিবৃতিদাতারা হলেন-

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, আদিবাসী অধিকার সুরক্ষাকর্মী, চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা রাণী য়েন য়েন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েমা খাতুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়এর শিক্ষক সাদাফ নূর, মানবাধিকার কর্মী ও থাইল্যান্ডের মাহিডল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রোজিনা বেগম, নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক নাসরিন খন্দকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, পরিবেশবিদ ও নারী অধিকার কর্মী ফরিদা আখতার, ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক নাজনীন শিফা, লেখক ও গবেষক পারসা সানজানা সাজিদ, নারী অধিকার কর্মী ও গবেষক দিলশানা পারুল, নৃবিজ্ঞানী ও চলচিত্র নির্মাতা নাসরিন সিরাজ, ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা এর পিএইচডি গবেষক হানা শামস আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজলী শেহরীন ইসলাম, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী বীথি ঘোষ, আলোকচিত্রী ও সভাপ্রধান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি তাসলিমা আখতার, , লেখক ও নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ ও সাংবাদিক ও গবেষক ড. সায়দিয়া গুলরুখ।  

Comments

The Daily Star  | English

JnU protests called off

Students and teachers of Jagannath University called off their protest last night after receiving assurances from the government that their demands would be met.

5h ago