সন্তানের পরীক্ষার প্রস্তুতির ৫ উপায়

সন্তানের পরীক্ষা নিয়ে বা মা-বাবার চিন্তা যেন শেষ থাকে না। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে সবাই চাই তার সন্তান যেন অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকে। তবে, তার মানে এই নয় যে তাকে বাড়তি চাপ দিতে হবে, বা প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে সামিল হতে হবে। বরং কিছু কৌশল মেনে চললে আপনার সন্তানও স্কুলের পরীক্ষায় ভালো করবে। একইসঙ্গে সে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবে। আর এজন্য সবচেয়ে প্রয়োজন আপনার সহযোগিতা। তাহলে জেনে নিন তেমন ৫টি উপায়।

স্কুল কার্যক্রমে নজর রাখা

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সন্তানের একাডেমিক কার্যক্রমে নজর রাখা। আপনার সন্তানের স্কুলের পরীক্ষায় প্রস্তুতিতে সহায়তা করতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। যে কোনো মূল্যায়ন বা পরীক্ষা ক্লাসে শেখানো বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়। তাই তার একাডেমিক কার্যক্রমে নিয়মিত নজর রাখুন। প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তা নিতে পারেন। কারণ শিক্ষকরাই আপনার সন্তানের দুর্বলতাগুলো সহজে চিহ্নিত করতে পারেন। যদি আপনার সন্তান কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে সমস্যার মুখোমুখি হয়, তাহলে তার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করতে পারেন। অথবা তার শিক্ষকের কাছে সাহায্য চাইতে পারেন।

শেখার কৌশল বুঝতে হবে

সবার শেখার কৌশল একরকম হয় না। সন্তানকে পড়তে বাধ্য করা এবং পরীক্ষার বিষয়গুলো মুখস্থ করতে বাধ্য করা তার একাডেমিক যাত্রাকে সমৃদ্ধ করার কার্যকর উপায় নাও হতে পারে। তাই তাকে কোনোকিছুতে বাধ্য করবেন না বা জোর করবেন না। বরং আপনি খুঁজে বের করুন সে কীভাবে শিখতে বা পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তারপর তাকে সেভাবে নির্দেশনা দিন। এতে সে অনুপ্রাণিত হবে এবং আনন্দের সঙ্গে শিখবে। ফলে, সবকিছু আরও ভালোভাবে মনে রাখতে পারবে।

সময়সূচী ঠিক করুন

বছরের শুরুতে সন্তানের জন্য একটি সময়সূচি তৈরি করুন। তাহলে নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট সময়ে তার পড়াসহ অন্যান্য অভ্যাস তৈরি হবে। স্কুলে কী শিখেছে তা নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করবেন না। বরং স্কুল থেকে ফেরার পর তাকে বিশ্রাম নিতে দিন। তারপর তার সঙ্গে ২০ মিনিট সময় কাটান। তখন সেদিন ক্লাসে যা শিখেছে তা নিয়ে আলোচনা করুন। একটি মৌখিকভাবে করতে পারেন, বা তার খাতায় লিখে রাখতে পারেন। এতে তার স্মৃতিশক্তিরও অনুশীলন হবে। একইসঙ্গে স্কুলে শেখা বিষয়গুলোও মনে রাখতে সহায়ক হবে।

আপনি যখন স্কুল থেকে পরীক্ষার সময়সূচী পাবেন, তখন একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন। সেই অনুযায়ী তার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। ওকে সহায়তা করুন। ওর পাশে থেকে উৎসাহ দিন। দুর্বল দিকগুলো বারবার সমাধান করে দিন ও তাকে অনুশীলন করতে বলুন। তাহলে সহজেই আয়ত্ত করতে পারবে। তবে, কখনোই বাড়তি চাপ দিতে যাবেন না।

নমুনা পরীক্ষা

আপনি চাইলেই বাসাতে নমুনা পরীক্ষা নিতে পারেন। এতে সে পরীক্ষার সঙ্গে অভ্যস্ত হতে শিখবে। একইসঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করার বিষয়টিও আয়ত্ত করতে পারবে। পরীক্ষার তারিখ কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে আপনি এটি শুরু করতে পারেন।

ঘুম, খাওয়া ও খেলা

পর্যাপ্ত ঘুম ও খেলার সঙ্গে আপনার সন্তানের সময়সূচির ভারসাম্য বজায় রাখুন। সে প্রতি রাতে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমায়, পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছে এটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া খেলা বা তার কোনো শখ থাকলে সেজন্য আলাদা সময় বরাদ্দ রাখুন। এতে তার সৃজনশীলতার বিকাশ হবে এবং চাপমুক্ত থাকবে।

পরিশেষে বলতে হয়, এ কথা সত্য যে আপনার সন্তানের জন্য পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। তবে, তার সামগ্রিক সুস্থতা একাডেমিক ফলাফলের চেয়েও কিন্তু বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরীক্ষাকালীন তার যত্ন নিন। কোনো কারণে একটি পরীক্ষা খারাপ করলে বকাবকি করবেন না। বরং পরবর্তীগুলো যেন ভালো হয় সেই উৎসাহ দিন। তাহলে সে মানসিকভাবেও শক্তি পাবে।

Comments

The Daily Star  | English

Make right to vote a fundamental right

The Constitutional Reform Commission proposes voting to be recognised as a fundamental right, so that people can seek legal remedies if it is violated.

14h ago