চালক-সুপারভাইজারকে মারধর, ফরিদপুর থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ

ফরিদপুরে বাসচালক ও সুপারভাইজারকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে বাস চালক ও শ্রমিকেরা। বিকেল থেকে বন্ধ আছে সব রুটে বাস চলাচল। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুটি বাসের চালক ও একটি বাসের সুপারভাইজারকে লাঠি দিয়ে পেটানোর  অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল থেকে ফরিদপুর থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাস শ্রমিকরা।

আজ বিকাল সোয়া ৩টার দিকে গোয়ালচামট মহল্লায় ফরিদপুরের নতুন পৌর বাসস্ট্যান্ডের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এর ফলে ঢাকাসহ ফরিদপুরের বিভিন্ন পথে চলাচলকারী যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।

কয়েকজন বাস শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকেল ৩টার দিকে টেকেরহাট থেকে ফরিদপুর আসা ও বোয়ালমারী থেকে ফরিদপুরে আসা দুটি বাস টার্মিনালে ঢুকছিল। এ সময় সড়কের পাশে ইজিবাইক দাঁড়িয়ে থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ওই সময় পুলিশের একটি ডাবল পিকআপ রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে ফরিদপুর শহরের দিকে আসার পথে নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা অতিক্রম করছিল। নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যানজট সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশের ওই গাড়ি থেকে সাদা পোশাকের কয়েকজন পুলিশ সদস্য বের হয়ে প্রথমে বোয়ালমারী থেকে আসা বাসচালক মো. আমির হোসেন (৫০)কে সিটে থাকা অবস্থায় জানালা দিয়ে লাঠি দিয়ে বাড়ি দেয়। ওই চালক গাড়ি বন্ধ করে বের হয়ে এলে তাকে আবার লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। একই সময় সাদা পোশাকধারী ওই পুলিশ সদস্যরা টেকেহাট থেকে আসা বাসের সুপারভাইজার মো. রেজাউল (৩০) ও চালক ঝন্টু খানকে (৪৫) চর থাপ্পর ও ঘুষি দেয় বলে অভিযোগ করেন তারা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বাস শ্রমিকরা ফরিদপুর থেকে সব পথে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। শ্রমিকরা নতুন বাসস্ট্যান্ডের সামনের সড়কে জড়ো হয়ে এ হামলার ঘটনার প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানায়। এ সময় কিছু সময়ের জন্য ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বিক্ষোভরত শ্রমিকরা সড়কের পাশে গিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ভিড় করেছেন। কিন্তু বাস চলাচল না করায় তাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। দেখা যায় কেউ বাসস্ট্যান্ডে বসে অপেক্ষা করছেন আবার কেউ ভিন্ন বাহনে নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন।

ফরিদপুরের কৈজুরি ইউনিয়নের বদরপুর এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ রূপা বেগম (৪০) জানান, তিনি ভাঙ্গায় মেয়ের বাড়িতে যাবেন বলে এসেছিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখেন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

অপর যাত্রী মধুখালীর রায়পুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী রঞ্জন দাস (৫০) জানান, তিনি সদরপুর যাবেন ব্যাবসার কাজে। কিন্তু ফরিদপুরে এসে দেখেন বাস চলাচল করছে না। এজন্য তিনি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির বলেন, পুলিশের একটি গাড়ি থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ নেমে বাসের দুই চালক ও এক সুপারভাইজারকে মারধর করেছে। এর মধ্যে বাস চালক মো. আমিরকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করা হয়েছে। শ্রমিকরা কোনো অন্যায় করলে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, বিচার হতে পারে কিন্তু শ্রমিকদের অমানবিক ভাবে পেটানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। শ্রমিকদের দাবি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশের গাড়িটি সনাক্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তারা বাস চালানো থেকে বিরত থাকবে।

ফরিদপুরের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক তুহিন লস্কর বলেন, আমি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করে দেখেছি সেটি একটি পুলিশের গাড়ি ছিল। তবে রেজিস্ট্রেশন বিহীন পুলিশের ওই গাড়িটি জেলা পুলিশের নয়। সেটি হাইওয়ে পুলিশ কিংবা পিবিআই বা অপর কোনো পুলিশ বাহিনীর কিনা তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

Comments

The Daily Star  | English

Specific laws needed to combat cyber harassment

There is an absence of a clear legal framework and proper definitions when it comes to cyber violence against women, speakers said at an event yesterday.They urged for specific legislation to combat such crimes..The roundtable, titled “Scanning the Horizon: Addressing Cyber Violence agains

2h ago