বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন-বাণিজ্য অংশীদার: নরেন্দ্র মোদি

নরেন্দ্র মোদি। ছবি: ডিডি নিউজের লাইভ থেকে

বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন ও বাণিজ্য অংশীদার বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২ দেশের ডেলিগেশনের সদস্য, সাংবাদিক বন্ধু, নমস্কার। সবার প্রথমে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রতিনিধিদের স্বাগত জানাই। গত বছর আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের ৫০ বছর, আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী একসঙ্গে পালন করেছি। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর আমরা প্রথম মৈত্রী দিবস পালন করেছি পুরো পৃথিবীতে।'

'আজ প্রধানমন্ত্রীর সফর আমাদের স্বাধীনতার মহোৎসবের মধ্যে হচ্ছে। আমার পুরো বিশ্বাস আছে, আগামী ২৫ বছরে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। গত কয়েক বছরে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা প্রতিটি ক্ষেত্রে খুব দ্রুতই বেড়েছে। আজ বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার এবং সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার', বলেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'সেই সঙ্গে (২ দেশের) জনগণের মধ্যে সম্পর্কেরও নিরন্তর উন্নতি হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমি সব দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে ও ২ দেশের বিভিন্ন বিষয়ে অনেক আলোচনা করেছি।আমরা ২ জনই এই বিষয়ে একমত যে করোনা মহামারি ও বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের অর্থ ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে হবে। আমাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং সীমান্তে বাণিজ্য অবকাঠামো বিকাশের মাধ্যমে ২ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা একে অপরের সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ত হবে, একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারবে।'

'আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য খুব দ্রুত বাড়ছে। বাংলাদেশি পণ্যের জন্য আজ ভারত পুরো এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় মার্কেট। এই বর্ধিত বাণিজ্যকে আরও এগিয়ে নিতে আমরা দ্বিপাক্ষিক কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্টের (সেপা) ওপর খুব শিগগির আলোচনা শুরু করব।'

'আমরা আইটি, মহাকাশ ও নিউক্লিয়ার খাতেও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। যা আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য অবদান রাখবে। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন এবং সুন্দরবনের মতো বনাঞ্চলকে সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছি।'

'বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সব দেশই কঠিন সময় পার করছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'রূপসা নদীতে রেল সেতু নির্মাণ যোগাযোগ বৃদ্ধিতে একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। এই সেতু ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের মাধ্যমে খুলনা ও মোংলা বন্দরের মাঝে তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের রেলওয়ে সিস্টেমের উন্নয়ন ও বিস্তারে ভারত সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।'

'৫৪টি নদী ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে রয়েছে। বহু বছর ধরে এগুলো ২ দেশের মানুষের জীবিকার সঙ্গে জড়িত আছে। এই নদী, এর ওপর তৈরি লোককথা, লোক সংগীত আমাদের সাংস্কৃতিক বিকাশেরও অংশ। আজ আমরা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। এতে করে ভারতের দক্ষিণ আসাম এবং বাংলাদেশে সিলেটের মানুষ লাভবান হবেন।'

তিনি আরও বলেন, 'আজ আমরা সন্ত্রাস ও চরমপন্থা বন্ধের বিষয়েও জোর দিয়েছি। ১৯৭১ সালের অনুপ্রেরণাকে জীবিত রাখার জন্যও এটা অত্যন্ত জরুরি যে, আমরা এক হয়ে এমন সব শক্তির মোকাবিলা করব যা আমাদের পরস্পরের বিশ্বাসে আঘাত করতে চায়।'

'বঙ্গবন্ধু যে প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল, তা বাস্তবায়নে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে চলতে থাকবে', যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Climate finance: COP29 draft proposes $250b a year

COP29 draft deal says rich nations should pay the amount to fight climate change

1h ago