ডিইপিজেডে যৌন হয়রানীর অভিযোগকারীকে চাকরিচ্যুতের অভিযোগ

সাভার
ছবি: স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) একটি তৈরি পোশাক কারখানায় যৌন হয়রানীর অভিযোগ করার জেরে ২ নারী পোশাক শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ওই ২ নারী ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ঢাকারিয়া লিমিটেড ওই ২ নারী শ্রমিককে গত ১৭ আগস্ট চাকরিচ্যুত করে। তবে, এর জন্য কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি চিঠিতে।

চাকরিচ্যুতির চিঠি ও চাকরিচ্যুত ২ পোশাক শ্রমিকের লিখিত অভিযোগের অনুলিপি দ্য ডেইলি স্টারের কাছে রয়েছে।

যৌন হয়রানীর অভিযোগকারী পোশাক শ্রমিক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি ১০ বছর যাবৎ ঢাকারিয়া লিমিটেড কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করতেন। ১০ মাস আগে তার সেকশন সুপারভাইজার আকতার প্রকাশ্যে কর্মরত অবস্থায় তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ঘটনাটি দেখে ফেলেন অপর একজন অপারেটর।

তিনি বলেন, 'বিষয়টি চেপে যেতে আকতারের পক্ষ হয়ে আমাদের ইউনিট ইনচার্জ আসিফ ইকবালসহ বেশ কয়েকজন আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। আমি তাদের চাপে নত না হয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেই। ঘটনার সাক্ষী দেন প্রত্যক্ষদর্শী আপা। তখন আকতার নিজের দোষ স্বীকার করে পদত্যাগ করে চলে যান।'

তিনি আরও বলেন, 'এরপর থেকেই ইউনিট ইনচার্জ ইকবাল বলতেন, আকতারকে যারা বিতাড়িত করছে তাদের কাউকেই কারখানায় রাখবো না। ওই ঘটনার জের ধরেই গত ১৭ আগস্ট আমাকে এবং এই ঘটনায় সাক্ষী দেওয়ায় ওই আপাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।'

'আমি কাজ ফিরে পেতে চাই এবং আসিফ ইকবালসহ আমাকে চাকরিচ্যুতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার চাই,' যোগ করেন তিনি।

সাক্ষী দেওয়া নারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'আমি ১৬ বছর যাবৎ কারখানাটিতে কাজ করি। এই ঘটনার আগে অপর একজন লাইন সুপারভাইজার এক নারী শ্রমিককে মুঠোফোনে অনৈতিক প্রস্তাব দিলে তখনও আমি অভিযোগকারীর পক্ষে ছিলাম। এ কারণেও ইউনিট ইনচার্জ আসিফ ইকবাল আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।'

তিনি আরও বলেন, 'যৌন হয়রানীর ঘটনার সাক্ষী দেওয়াতেই আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসিফ ইকবাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই ২ জনকে কেন চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তা জানি না। যৌন হয়রানীর যে ঘটনাটি বললেন, সেটি আমাকে প্রথমে জানানো হয়নি। তারা কাউন্সিলে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন, কাউন্সিল বিচার করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি তাদেরকে কেন হুমকি দেব? তাদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। তাদের সব অভিযোগই ভিত্তিহীন ও মনগড়া।'

কারখানাটির ব্যবস্থাপক (এইচআর ও এডমিন) মহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমরা বেপজার অধীনে কারখানা পরিচালনা করি। কোনো বক্তব্য নিতে হলে বেপজার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, কিংবা আমাকে ইমেইলে প্রশ্নগুলো লিখে পাঠাতে হবে।'

যোগাযোগ করা হলে ডিইপিজেডের জিএম আব্দুস সোবহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটি ১১ মাস আগের একটি ইভটিজিংয়ের ঘটনা। কোনো ঘটনার সাক্ষী দেওয়ায় কিংবা কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাউকে চাকরিচ্যুত করার তথ্য সঠিক না। কারখানা চাইলে যেকোনো শ্রমিককে সুবিধা প্রদান সাপেক্ষে চাকরিচ্যুত করতে পারে। কারখানাটি ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিককে নিয়ম অনুযায়ী সুবিধা প্রদান করে চাকরিচ্যুত করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'যদি ওই ঘটনার কারণেই চাকরিচ্যুত করা হতো তাহলে এত দিন পরে হতো না। মেয়েটি আমার কাছে এসেছিলেন। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

6h ago