‘যুদ্ধ-মহামারির কারণে বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা’
বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বুধবার সংসদ অধিবেশন চলাকালে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'কোভিড মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল প্রবৃদ্ধি, সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যাহত, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস, খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক কার্গো ফ্রেইট খরচ বৃদ্ধি, রপ্তানি হ্রাস, প্রবাস আয়ের ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির কারণে এই শঙ্কাজনক পরিস্থিতি হয়েছে।'
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে এটি প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার গত ১৪ বছর ধরে বাজেট ঘাটতি এবং ঋণের মাত্রা উভয়ই টেকসই ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'প্রবাসী আয় বাড়াতে প্রণোদনা বাড়ানোসহ রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করা হয়েছে। ডলারের চাহিদা বাড়ানোর প্রবণতা ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক দফায় ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান সমন্বয় করেছে। গত অর্থবছরে আগস্ট মাসে ডলারের দামের তুলনায় চলতি অর্থবছরের আগস্ট মাসে ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বাড়িয়ে দাম ৯৫ টাকা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে। আমদানি নির্ভরতা ও কম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ব্যয় বন্ধ অথবা হ্রাস করা হচ্ছে। বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে এবং আন্ডার-ওভার ইনভয়েসিংয়ের বিষয়টি সতর্ক পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।'
সরকারের নেওয়া এসব ব্যবস্থার কারণে শিগগির ব্যালেন্স অব পেমেন্টের সার্বিক উন্নতি হবে বলে তিনি দৃঢ় বিশ্বাসী বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ২০১৫ সাল থেকে প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় অবসর ভাতা প্রদানের পরিমাণও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। বর্তমান সরকারের সময়ে ২০০১-২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত ১ লাখ ১৪ হাজার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে ৬ হাজার ৬১ কোটি টাকা অবসর সুবিধা দেওয়া হয়েছে।'
বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতিসংঘে বর্তমানে ৮টি শান্তিরক্ষা মিশনে মোট ৬ হাজার ৮৩৬ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত আছেন। এরমধ্যে ৫২১ জন নারী। মিশনে নিয়োজিত থাকাবস্থায় এ পর্যন্ত মোট ১৬১ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৫৮ জন আহত হয়েছেন।'
Comments