নাটোর

র‌্যাবের বিরুদ্ধে ‘মাদক চোরাকারবারিকে’ আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ

নাটোর
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

নাটোরের লালপুরে ৪০০ বোতল ফেনসিডিল ও ১ কেজি ২৬০ গ্রাম হেরোইনসহ আটকের পর সন্দেহভাজন এক মাদক চোরাকারবারিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৫) এর কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে।

গত ৮ আগস্ট রাতে লালপুরের গোপালপুরে মাদক উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় রাজশাহীতে র‌্যাব-৫-এর ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশাল কোম্পানি (সিপিএসসি) ৩ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে লালপুর থানায় মামলা করেছে।

গত ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার ৩ জন—ট্রাকচালক শরীফ মিয়া (৩৩), ট্রাকের হেলপার নাজির হোসেন (২৭) ও শ্রমিক জয়নাল হোসেনকে (৪২) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।

আসামিরা বিচারকের সামনে অভিযোগ করেন যে, তল্লাশীর সময় ট্রাকে যার কাছে মাদক পাওয়া গিয়েছিল তাকে গ্রেপ্তার না করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ সঠিক হলে এটি একটি গুরুতর অপরাধ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দিন গত ১৪ আগস্ট অভিযোগ আমলে নেন এবং নাটোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আতাউল গণি ওসমানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আদালতে গ্রেপ্তারকৃতরা বলেছেন, রাজশাহী থেকে আম ও পেয়ারা কিনে আনার জন্য আব্দুল মতিন নামের এক ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ থেকে তাদের ট্রাক ভাড়া করে। কিন্তু রাজশাহীতে পৌঁছে মতিন কোনো ফল না কিনে ট্রাকটি পদ্মার পাড়ে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে বালু কেনেন।'

'ট্রাকে বালু তোলার সময় মতিন তাদেরকে বালু বিক্রেতার কাছ থেকে লেনদেনের রশিদ আনতে পাঠান। পরে বালু নিয়ে রওনা হওয়ার পর মতিন রাস্তার মাঝখানে ট্রাক থেকে নামতে চেষ্টা করেন।'

'সেসময় মতিনকে নামতে বাধা দেন ট্রাকচালক ও হেলপার। পরে রাস্তায় র‌্যাবের একটি দল ট্রাক থামিয়ে মতিনসহ ৪ জনকে আটক করে।'

ওই ৩ জনের ভাষ্যমতে, র‌্যাব সদস্যরা ট্রাক থেকে ফেনসিডিল ও হেরোইন খুঁজে পান। জিজ্ঞাসাবাদে মতিন মাদক রাখার দায়ও স্বীকার করেন। তবু র‌্যাব সদস্যরা মতিনকে আসামি না করে নিয়ে যান এবং বাকি ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই মামলার বাদী র‌্যাব-৫-এর রাজশাহীতে সিপিএসসিতে কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. নাসিম উদ্দিন বলেন, 'আদালতে ৩ আসামি যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। গ্রেপ্তারের পর আসামিদের ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।'

সেদিন অভিযানে নেতৃত্বদানকারী র‌্যাব-৫ এর রাজশাহীতে সিপিএসসি-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. নাজমুস সাকিব বলেন, 'আমরা ট্রাক থেকে ৩ আসামিকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করেছি।'

অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা সত্য নয়। এক আসামি র‌্যাব সদস্যদের দেখে পালিয়ে যান।'

মাদকের এই মামলাটি তদন্ত করছেন লালপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম। আসামি পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মামলার তদন্ত শেষ হলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানান তিনি।

আদালতের আদেশের তদন্তের বিষয়ে নাটোরের পিবিআই বিশেষ সুপার (এসএস) শরীফ উদ্দিন আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের জন্য ২০ আগস্ট আদালতের আদেশ পেয়েছি। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং শিগগির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Magura child rape case trial begins; four indicted

The court has set April 27 for the next date of hearing in the case

7m ago