হাতিরঝিল থানা হেফাজতে যুবকের মৃত্যু, এসআই ও কনস্টেবল বরখাস্ত
রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় সুমন শেখ (২৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটি কোম্পানির ৫৩ লাখ টাকার চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন সুমন। এ অভিযোগে ৪ জনকে আটক করা হয়। গতকাল সুমনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে থানায় এনে আলাদা একটি লকআপে রাখা হয়েছিল। রাত ৩টা ৩২ মিনিটে ভেন্টিলেটরের রডের সঙ্গে সুমন নিজের ট্রাউজার খুলে গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। থানার সিসিটিভি ফুটেছে এটি দেখা গেছে।'
এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল জাকারিয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিসি আজিমুল হক।
তিনি বলেন, 'সেসময় থানায় ডিউটি অফিসার ছিলেন হেমায়েত হোসেন এবং কনস্টেবল জাকারিয়া ওই লকআপ দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন। দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়েছে।'
এ ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুককে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, '৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুমনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।'
এদিকে 'সুমনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে' দাবি করে থানার সামনে বিক্ষোভ করছেন তার পরিবার ও স্বজনরা।
সুমনের স্ত্রী জান্নাত বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের বাসা পূর্ব রামপুরা হাই স্কুল গলিতে। গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় কয়েকজন বাসায় এসে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলেন। কিন্তু কী অভিযোগ সেটা তারা জানাননি।'
'আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি চাই,' বলেন তিনি।
পরিবার জানায়, সুমন শেখের বাড়ি নবাবগঞ্জ থানার দক্ষিণকান্দি। তিনি ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে মালামাল ডেলিভারির কাজ করতেন। তার একটি ৬ বছরের সন্তান আছে।
Comments