ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর নাচের ভিডিও ফাঁস
কিছুদিন আগেও ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে নবীন রাষ্ট্রপ্রধান। তার এই বিরল উপাধি চিলির প্রেসিডেন্টের কাছে হাতছাড়া হলেও ৩৬ বছর বয়সী সানা মারিন এখনও তার দেশে যথেষ্ট জনপ্রিয়। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নাচ, গান ও পার্টি করার কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন।
আজ মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন সানা মারিনের বরাত দিয়ে জানিয়েছ, তিনি হইহুল্লোড়ের সঙ্গে পার্টি করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে একইসঙ্গে তিনি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন।
ভিডিওতে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশ ফিনল্যান্ডের নেতাকে তার বন্ধুদের সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে নাচতে দেখা যায়।
ফিনল্যান্ডের কুয়োপিওতে মারিন সাংবাদিকদের বলেন, 'এই ভিডিওগুলো ব্যক্তিগত এবং একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে এগুলো ধারণ করা হয়েছিল। এই ভিডিওটি জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত হওয়ায় আমি খুবই বিরক্ত হয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে রাত কাটিয়েছি। আমরা শুধু হইহুল্লোড়ের মাধ্যমে পার্টি করেছি। আমি নেচেছি আর গান গেয়েছি।'
ভিডিওতে মারিন ও আরও ৫ জনকে ক্যামেরার দিকে পোজ দিয়ে নাচতে দেখা যায়। আরেকটি ভিডিওতে মারিনকে মাটিতে বসে ক্যামেরার দিকে মুখ করে গান গাইতে দেখা যায়।
এই ঘটনায় মারিনের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ বলছেন এ ধরনের ব্যবহার দেশের নেতার জন্য মানানসই নয়। বিরোধী দলের একজন পার্লামেন্ট সদস্য মিক্কো কারনা টুইট করে দাবি করেন, মারিনের মাদক পরীক্ষা করানো উচিৎ।
মারিন সাংবাদিকদের জানান, অনুষ্ঠানে তিনি মদ পান করেছেন, তবে সেখানে কোনো মাদকের ব্যবহার হয়নি।
তবে অনেকেই মারিনের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। তারা সমালোচকদের ভণ্ড বলে আখ্যায়িত করছেন।
সুইডেনের আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অশোক সোয়েইন টুইট করেন, 'কেনো তিনি কাজ শেষে পার্টি করতে পারবেন না? আমাদের নেতারা কী মানুষ নন?'
এই ভিডিওর মাধ্যমে তাকে কেউ ব্ল্যাকমেল করছে না বলে নিশ্চিত করেছেন মারিন।
তিনি বলেন, 'আমাকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে না। এই ভিডিওগুলো ব্যক্তিগত এবং এগুলো বাইরে প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল না।'
'এগুলো একটি ব্যক্তিগত বাড়িতে গ্রীষ্মকালে ধারণ করা হয়েছিল। তবে আমি জানাচ্ছি না কার বাড়ি সেটি', যোগ করেন তিনি।
ভিডিও ধারণের বিষয়টি তিনি জানতেন বলে নিশ্চিত করেন মারিন। তবে এই ভিডিওগুলো সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করা হবে, সেটা তিনি জানতেন না।
এর আগেও ফিনল্যান্ডের প্রাইম মিনিস্টারের ব্যক্তিগত জীবন আলোচনায় এসেছে। ২০২১ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার অল্পদিন পর তার একটি ছবি ভাইরাল হয়, যেটি একটি নাইটক্লাবে ধারণ করা হয়েছিল। করোনায় আক্রান্ত হয়েও আইসোলেশনে না থাকার জন্য তিনি সবার কাছে ক্ষমা চান।
টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি ভুল করেছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমার আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ ছিল।'
তবে তিনি আরও জানান, সব কিছু ছাড়িয়ে, তিনি একজন মানুষ। তারও নিজস্ব ব্যক্তিসত্তা আছে।
'যদিও আমি দেশের প্রাইম মিনিস্টার, তবুও আমার নিজস্ব একটি ব্যক্তিসত্তা রয়েছে। সুতরাং আমি আমার স্বভাব ও আচার আচরণ বদলাবো না। অবশ্যই, আমি কী বলছি, সে ব্যাপারে আমাকে সতর্ক হতে হবে, কারণ আমার বক্তব্য অনেক ক্ষেত্রে সরকারের বক্তব্য হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। তবে আমি ভবিষ্যতেও আমার স্বতন্ত্র ব্যক্তি-সত্ত্বা ধরে রাখবো।'
Comments