‘বিভ্রান্তি এড়িয়ে তথ্য আদান-প্রদানে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ আলোচনা করছে’

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ছবি: এএফপি

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ রাখার বিষয়ে যেন কোনো বিভ্রান্তি না থাকে তা নিশ্চিত করতে তথ্য আদান-প্রদানে সহযোগিতার জন্য সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ।

আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান। 

এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফেরত আনাও সম্ভব হতে পারে বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, 'আমরা চেষ্টা করব বাংলাদেশ থেকে কেউ যেন অন্য দেশে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করতে না পারে। এটা শুধু সুইজারল্যান্ডই নয়, যে কোনো দেশ। যেমন পানামা বা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ।'

গত ১০ আগস্ট একটি অনুষ্ঠানে সুইস রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়ার্ড মন্তব্য করেন যে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য চাওয়া হয়নি। 

পরদিন এর জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান যে, রাষ্ট্রদূত মিথ্যা বলেছেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে থাকা তথ্য আদালতে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন হাইকোর্টে দুটি পৃথক প্রতিবেদন  জমা দেয় আদালতে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়ে, বিএফআইইউ সুইজারল্যান্ডের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (এসএফআইইউ) কাছে এগমন্ড সিকিউর ওয়েবের (ইএসডব্লিউ) মাধ্যমে ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছিল। 

তবে, এসএফআইইউ জানিয়েছিল যে তাদের কাছে একজনের তথ্য আছে, বাকিদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।

এই প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে ঢাকা ও বার্নে সুইস কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের একটি স্বাধীন সংস্থার যোগাযোগ হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না হওয়ায় সুইস রাষ্ট্রদূত সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে অবগত নন। সম্ভবত সে কারণেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ এমন একটি ব্যবস্থা রাখতে চায় যার মাধ্যমে দুই দেশের সংস্থাগুলো সমন্বয় করে কাজ করতে পারে যেন তথ্যের সঠিক আদান-প্রদান হয়।'

'সুইজারল্যান্ড আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ এবং উন্নয়ন সহযোগী। সুতরাং, আমরা এমন কোনো ধারণা তৈরি করতে চাই না যা সঠিক নয়,' বলেন তিনি। 

বাংলাদেশ সরকার তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে কোনো চুক্তিতে সই করবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সুইস কর্তৃপক্ষ কিছু পরামর্শ দিয়েছে এবং সেগুলো গ্রহণযোগ্য হলে সরকার এ বিষয়ে এগুবে।'

'আমাদের মনে রাখতে হবে যে ব্যাংক তহবিলের তথ্য তাদের দেশীয় আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং সমস্ত তথ্য সর্বজনীনভাবে প্রকাশ করা যায় না। সরকারেরও বিধিনিষেধ বজায় রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে,' বলেন তিনি। 

বাংলাদেশ বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের বিষয়ে তদন্ত করতে চাইলে কী প্রয়োজন জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে পারেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করে না।'

তিনি আরও বলেন, 'সবাই অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচার করে এমন ধারণা ঠিক নয়। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন যারা ব্যবসা করেন এবং বিদেশি  ব্যাংকে টাকা জমা করেন।'

 

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

2h ago