‘মানবাধিকার নিয়ে রাজনীতি জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষায় সহায়ক না’

Foreign_Ministry

মানবাধিকার এজেন্ডার রাজনীতিকরণ কখনোই জনগণের মানবাধিকারকে উৎসাহিত ও সুরক্ষায় সাহায্য করে না। বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, আন্তরিক সংলাপ এবং সহযোগিতা হলো পথ।

আজ শনিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে এ কথা জানায়।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট আগামীকাল রোববার ৪ দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন। এই সফরকে সরকারের ওপর 'অযাচিত চাপ' দেওয়ার উপলক্ষ হিসেবে দেখিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কিছু দৃশ্যমান 'রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা' হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

বাংলাদেশ সফরকালে বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন ও গুমের মতো গুরুতর অপরাধ অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রকাশ্যে আহ্বান জানানোর জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের প্রতি দাবি জানিয়েছে ৯টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন।

সংগঠনগুলো হলো—অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক (এডিপিএএন), এশিয়ান ফেডারেশন এগেনস্ট ইনভলান্টারি ডিজএপিয়ারেন্স, এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, ইলিওস জাস্টিস-মোনাশ ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট ইনফোর্সড ডিসএপিয়ারেন্স, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস এবং রবার্ট এফ. আর কেনেডি।

গত ১০ আগস্ট দেওয়া বিবৃতিতে তারা বলে, 'যদি কমিশনার স্পষ্টভাবে এই অধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করতে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার দাবি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার নীরবতাকে ব্যবহার করে অধিকার হরণ চলমান রাখবে এবং মানবাধিকার কর্মীদের অবজ্ঞা করবে।'

তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং জোরপূর্বক গুমের ঘটনা চালিয়ে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান ঘনিষ্ট সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখা ও আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে দায়িত্বশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার জন্য হাইকমিশনারের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে, নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দেশের অর্জনের বিষয়ে হাই কমিশনারের বস্তুনিষ্ঠ প্রশংসায় বাংলাদেশ লাভবান হবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান কক্সবাজার সফরে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পাবেন। রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি—মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের এজেন্ডা জোরদার করার ক্ষেত্রে এই সফর তার সহায়ক হবে, বিবৃতিতে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

আগামী ১৪ থেকে ১৭ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান হিসেবে প্রথমবার বাংলাদেশ সফর করবেন মিশেল।

মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও দেশীয় আইনি কাঠামো হালনাগাদ করা, সচেতনতা সৃষ্টি এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে সংবেদনশীল করার মাধ্যমে জনগণের মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচারে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা তুলে ধরার জন্য এই সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও ঢাকা সফরে মিশেল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, যুব প্রতিনিধি, সিএসও নেতা এবং শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

তিনি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করে যে, জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার প্রধান স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করবেন কীভাবে মানবাধিকার সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে 'অলৌকিক' কাজ করছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চলমান মহামারি সত্ত্বেও, দেশে কেউ অনাহারে মারা যায়নি।

১৬৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ জনগণের খাদ্য, বাসস্থান, উন্নয়নের মতো মৌলিক অধিকারকে উৎসাহিত করে। বাংলাদেশে শপিংমল, স্কুল বা উপাসনালয়ে কেউ নিহত হচ্ছে না।

ঢাকা সফরকালে হাই কমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনসহ অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে তার কার্যালয় জানিয়েছে।

এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা অধীর আগ্রহে এই সফরের জন্য অপেক্ষা করছি। তিনি মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি দেখবেন এবং কী কী  চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি সে সম্পর্কেও জানতে পারবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Trump says Iran has 'maximum' two weeks, dismisses Europe peace efforts

Israel's war with Iran entered its second week on Friday with the Israeli military chief warning of a "prolonged campaign"

44m ago