বাংলাদেশকে পাশে চায় চীন: শাহরিয়ার আলম

শাহরিয়ার আলম
মো. শাহরিয়ার আলম। ছবি: সংগৃহীত

যৌথ সহযোগিতা ও 'অভিন্ন ভবিষ্যত' পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের জন্য—চীন তা প্রত্যাশা করে এবং বাংলাদেশকে তারা পাশে চায়।'

বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে চীনের সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এ মন্তব্য করেছেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের আলোচনা শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন। এরমধ্যে ঘণ্টাখানেক ছিল দ্বিপাক্ষিক আলোচনা। ৪টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

তিনি জানান, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে তিনি ৫ বছর পর বাংলাদেশে এলেন। এরমধ্যে অর্ধেক সময় কোভিড পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে গেছে। তারপরও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অভূতপূর্ব কাজ করে যাচ্ছেন। এটা দেখে চীন আনন্দিত।

বিশ্ব পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পৃথিবীর প্রতিটি নাগরিকেরই অধিকার আছে একটা ভালো জীবনের। আমাদের সবারই সবচেয়ে বড় শত্রু হওয়া উচিত 'দারিদ্র'।

তিনি বলেছেন যে, চীনেও একটি বড় অংশে দারিদ্র আছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এক বৈঠকের বরাত দিয়ে তিনি তা বলেছেন।

তিনি আরও বলেছেন, চীন গত কয়েক বছরে ৮০০ মিলিয়ন মানুষকে তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দারিদ্র থেকে বের করে এনেছে। বাংলাদেশও সেই কাজটি করছে। অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাওয়া প্রতিটি নাগরিকের বা প্রতিটি দেশের অধিকার।

তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নাম উল্লেখ করে বলেছেন, তাদের ৯৬ মিলিয়ন সক্রিয় সদস্য আছে। তারা ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন নাগরিককে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে।

তার মতে, তাদের মধ্যে তেমন উল্লেখযোগ্য মতপার্থক্য নেই। কারণ তাদের লক্ষ্য একই। তা হলো—রিভাইটালাইজিং দ্য চাইনিজ ইকোনমি এবং সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি।

তিনি বলেছেন যে, কিছু রাষ্ট্র আছে যারা 'ভুল' বোঝে বা 'মিস ইন্টারপ্রেট' করে। সে বিষয়ে কিছুটা কথা হয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন যে, বাংলাদেশের ইকোনমিক জোনে বিশেষ করে চট্টগ্রামে যে ইপিজেডটি তৈরি হচ্ছে সেখানে অধিক পরিমাণে চাইনিজ কারখানা ও প্রযুক্তি শিফট করতে তারা সহযোগিতা করবেন। সামনের দিনে তারা একটা 'পিপিপি কো-অপারেশন' সমঝোতা চুক্তি করতে চান।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, বিশেষ অর্থনীতি অঞ্চল খুব তাড়াতাড়ি চালু করার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের তরফ থেকে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টিকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। এর ফলে ২ দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুবই জরুরি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের বক্তব্য সম্পর্কে শাহরিয়ার আলম বলেছেন, এত ব্যস্ততার মধ্যে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরের জন্য তাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। আগামীতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করা হবে। বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনার সরকারের তরফ থেকে পররাষ্ট্র মোমেন এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর বিষয়ে তিনি বলেছেন। এটা একটা বড় ইস্যু।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। চীন বলেছে যে তারা চেষ্টা করছে। মিয়ানমারের যে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলো তাতে শুধু বাংলাদেশের নয়, অনেক দেশের সমস্যা হচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে চীন অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরালোভাবে বলেছেন যে, চীনের সহযোগিতা প্রয়োজন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা অনেক দূর এগিয়ে ছিল। এর ধারাবাহিকতা দরকার।

রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, চীন সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের 'এক চীন নীতি'র জন্য তারা ধন্যবাদ দিয়েছেন বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

Comments

The Daily Star  | English

Parties agree on chief justice appointment, limiting emergency powers

Manifesto provision allows top-two judge choice; cabinet to approve emergency declaration

30m ago