বিএনপি নেতাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংরক্ষণে সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করায় বিএনপি নেতাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী জ্বালানির আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধিতে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের যেকোনো বিপদ থেকে রক্ষায় সরকারের সাশ্রয়ী নীতির বিরুদ্ধে যারা এ ধরনের কাজ করছে তাদের বিদ্রুপাচ্ছলে প্রচলিত প্রবাদ 'হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেওয়ার' প্রতিও ইঙ্গিত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তার ব্যবস্থা তার সরকার করবে।

প্রধানমন্ত্রী আজ সোমবার সকালে শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ এর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন এলাকার অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি দেখেছি আমাদের বিএনপি নেতারা হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করছে। তো তাদের হাতে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে, তাদের সবার হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেন। আর দেশের মানুষকে আমরা নিরাপত্তা দেব এবং দেশের মানুষ যাতে ভালো থাকে সেই ব্যবস্থা নেব।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের কথা ছিল প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার আমরা দিয়েছি। আজকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে বিশ্বের প্রত্যেকটা দেশই- আমেরিকা হোক, ইংল্যান্ড হোক বা আমাদের প্রতিবেশী ভারত হোক সকলেই এ দিকে নজর দিয়েছে। এ বিষয়টা সবার মাথায় রাখতে হবে। যখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খায় তখন আমরা আগাম ব্যবস্থা নিয়েছি যেন ভবিষ্যতে কোনো বিপদে না পড়ি, সাশ্রয়ী হয়েছি।'

তিনি বলেন, 'আর সাশ্রয়ী হওয়ার অর্থ এই নয় যে, এখান থেকে লুটপাট করে খেয়েছি। লুটপাট তো বিএনপিই করে গেছে। আমরা সেই লুটপাট বন্ধ করে উন্নতি করেছি, নইলে কীভাবে মাত্র ৩ বা সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে আজকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করেছি।'

তিনি ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট থেকে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার এবং পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনে সেটা কমে ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে আসার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'যারা এটা করেছে আসলে তারাই লুটপাট করেছে। আর যারা বাড়াতে পারে তারা লুটপাট করে না বরং প্রতিটি পয়সাকে কাজে লাগানোতেই এই উৎপাদনটা বৃদ্ধি হয়।'

তিনি করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব মন্দার খণ্ডচিত্র তুলে ধরে বলেন, 'কেবল বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বেই, এমনকী অনেক উন্নত দেশেই অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। আমেরিকার মতো জায়গায় যেখানে ১ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি ছিল, সেটা ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, জার্মানিসহ ইউরোপের বহু দেশে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশে আমরা ৭ দশমিক ৫ শতাংশে মুদ্রাস্ফীতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি।'

তিনি এসময় দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি এবং প্রত্যেকের নিজস্ব জলাশয় কাজে লাগানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং কৃষক লীগকেও এ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এবং দলের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।

কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Drug smuggling via air, land routes on the rise

This grim picture emerges as Bangladesh, like other countries around the world, observes the International Day Against Drug Abuse and Illicit Trafficking today.

12h ago