জনশুমারি: দেশে প্রথমবারের মতো পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি
বাংলাদেশে জনশুমারির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সংখ্যায় পুরুষদের ছাড়িয়ে গেছে নারীরা।
জনসংখ্যা ও আবাসন শুমারি-২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে প্রতি ১০০ জন নারীর বিপরীতে পুরুষের সংখ্যা প্রায় ৯৯ জন।
আজ বুধবার রাজধানীতে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের ষষ্ঠ জনশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, প্রবাসীদের বাদ দিয়ে দেশের জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটির বেশি। সেই হিসাবে ২০১১ সালের জনশুমারির পর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ।
২০২১ সালে জনশুমারি পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সেটা পিছিয়ে যায়।
বিশ্বের জনসংখ্যা নিয়ে জাতিসংঘের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিশ্বে নারী-পুরুষের অনুপাত হওয়ার কথা ১০০:১০১.৬৮।
গত জনশুমারিতে বাংলাদেশে নারী-পুরুষের অনুপাত ছিল ১০০.৩ এবং এর আগে ২০০১ সালের শুমারিতে এই অনুপাত ছিল ১০৬.৪।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নারীদের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ার কারণে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি হতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নারী-পুরুষের বর্তমান আনুপাতিক হারের আরেকটা কারণ হতে পারে বহু সংখ্যক মানুষের বিদেশ যাওয়া।'
তবে, বিশ্বব্যাপী নারীর সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপালে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি। যেখানে নারী-পুরুষের অনুপাত ৯৫:৯১ শতাংশ।
ভারতে, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পরিচালিত পঞ্চম জাতীয় পরিবার ও স্বাস্থ্য সমীক্ষায় (এনএফএইচএস) দেখা গেছে, প্রতি ১ হাজার পুরুষের বিপরীতে সেখানে নারীর সংখ্যা ১ হাজার ২০ জন।
বাংলাদেশের সবশেষ জনশুমারিতে আরও দেখা গেছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বর্তমানে কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশের নিচে। যা এর আগের শুমারিতে ছিল ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
২০১১ সালের জনশুমারি অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ। যা ২০০১ সালের শুমারিতে পাওয়া সংখ্যার তুলনায় প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বেশি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতি জনশুমারিতে সাধারণত ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ যোগ হয়। তবে, এবার জনসংখ্যা বৃদ্ধি কমেছে।
গত ১৫ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ব্যাপক পরিসরে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সারাদেশে ষষ্ঠ জনশুমারি পরিচালিত হয়েছিল।
জনশুমারি জনসংখ্যার সামগ্রিক ধারণা, এর গঠন, কর্মশক্তি, ঘনত্ব, আবাসন ও অন্যান্য আর্থ-সামাজিক সূচকগুলো সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রদান করে। যা অর্থনৈতিক ও অন্যান্য নীতি সঠিকভাবে প্রণয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
Comments