চবিতে যৌন নিপীড়ন

অভিযুক্ত ৩ ছাত্রকে আজ বা আগামীকালের মধ্যে আজীবন বহিষ্কার করা হবে: উপাচার্য

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ৪ জন। ছবি: স্টার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত ৩ ছাত্রকে আজ শনিবার অথবা আগামীকালের মধ্যে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য শিরীণ আখতার।

আমাদের চবি সংবাদদাতা জানান, আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ তম বার্ষিক সিনেট সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, 'গতকাল রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করেছে র‍্যাব। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৩ জন। এটা খুব লজ্জার সঙ্গে বলতে হচ্ছে, তাদের আজ অথবা আগামীকালের মধ্যেই আজীবন বহিষ্কার করা হবে।'

উপাচার্য আরও বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে এটি খুব লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত এ ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বিশেষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠিয়েছেন।'

এর আগে, সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৭ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ জানান, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক। তাদের কাছ থেকে ওই ছাত্রীর মোবাইলসহ ৩টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে এবং ২টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— চবির ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আজিম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুল আক্তার ওরফে বাবু, হাটহাজারী সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা এবং একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী নূর হোসেন শাওন।

তাদের মধ্যে আজিম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী।

শনিবার ভোররাত আড়াইটার দিকে রেজাউল হক রুবেল ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেন যে, আজিম ছাত্রলীগের কর্মী।

তিনি বলেন, 'আজিম বগিভিত্তিক সংগঠন সিএফসি এবং বাবু ও শাওন বগিভিত্তিক সংগঠন ভিএক্সের কর্মী।'

র‌্যাব জানায়, ঘটনার সঙ্গে ৬ জন জড়িত। তার মধ্যে ৫ জন সরাসরি সেই শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন করেছেন।

'এ ঘটনায় ৬ জনের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি ২ জন পলাতক আছেন। তাদের ২ জনেরই নাম মো. সাইফুল। তারা বহিরাগত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে থাকেন', জানায় র‌্যাব।

গ্রেপ্তার হওয়া বহিরাগতদের অনেক আত্মীয়-স্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে চাকরি করেন বলেও জানায় র‌্যাব।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ঘটনার সময় শাওন ও সাইফুল প্রথমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে দেখতে পান। পরে তারা কল দিয়ে অন্যদের ডেকে নেন। বাকিরা এসে সেই শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুর কাছে চাঁদা দাবি করেন। পরে তারা ভুক্তভোগীর বন্ধুকে আটকে রেখে ৩টি মোবাইলে যৌন নিপীড়নের ভিডিও ধারণ করেন। তাদের মধ্যে একটি মোবাইল আজিমের এবং অপর ২টি সেই ছাত্রী ও তার বন্ধুর।

র‌্যাব আরও জানায়, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেহেদি হাসান হৃদয় নামে চবি শাখা ছাত্রলীগের আরও এক কর্মীকে আনা হয়েছে। তিনি এখন র‌্যাবের হেফাজতে আছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ঘটনার পর তিনি একজনের ফোন দিয়ে বিষয়টি তার বন্ধুদের জানান। সেটা হৃদয় নাকি অন্য কেউ, ট্রমায় থাকার কারণে সেটা এখনো তিনি নিশ্চিত করতে পারছেন না। তবে গ্রেপ্তার ৪ জন বলেছেন যে, হৃদয় সেখানে ছিলেন না। যদি তিনি না থেকে থাকেন, তাহলে আমরা তাকে ছেড়ে দেবো।

গতকাল রাতে প্রথম রাউজানের ফুফুর বাসা থেকে আজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে বাকিদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। 

Comments

The Daily Star  | English

Opening aid corridors, leasing out ports not this govt’s job

Making decisions on a “humanitarian corridor” to Rakhine and leasing out container terminal of Chittagong Port to foreign companies are not the interim government’s job, said BNP acting chairman Tarique Rahman last night.

4h ago