যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক শক্তিকে ছাড়াল বায়ু ও সৌরশক্তি

ছবি: ইলেকটেক

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে বায়ু ও সৌরশক্তি থেকে। এটি চলতি বছরের এপ্রিল মাসের হিসাব। 

প্রাকৃতিকভাবে নবায়নযোগ্য শক্তিকে বলা হয় ক্লিন এনার্জি। বারবার ব্যবহারের পরও তা একেবারে ফুরিয়ে যায় না এবং শক্তির সংকট রোধে এর ভূমিকা বেশ উল্লেখযোগ্য। আর এই সম্ভাবনা দেখেই হয়তো প্রযুক্তির দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা, বিশ্বের অন্যতম চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রও বর্তমানে ক্লিন এনার্জির দিকে ঝুঁকছে। 

চলতি বছরের এপ্রিল মাসের হিসাব অনুযায়ী, সানডে ক্যাম্পেইনের একটি গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফর্মেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৩০ শতাংশ এসেছে ক্লিন এনার্জি থেকে। এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল বায়োমাস, ভূ-তাপীয় শক্তি, পানিবিদ্যুৎ এবং এর পুরোটাই চালিত হয়েছে বায়ু ও সৌরশক্তির মাধ্যমে। 

এ ছাড়া, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ২৫ শতাংশেরও বেশি আসে ক্লিন এনার্জির ব্যবহার থেকে। ২০২২ সালের প্রথম ৪ মাসে পানিবিদ্যুতের পরিমাণ ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, বায়ুশক্তি ব্যবহার করে পানিবিদ্যুতের চেয়ে ৭০ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। 

ইআইএ-র সর্বশেষ সংখ্যার 'ইলেকট্রিক পাওয়ার মান্থলি' প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সৌরশক্তির বৃদ্ধির হার বছরে ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং বায়ুশক্তি বৃদ্ধির হার ২৪ দশমিক ২ শতাংশ। এই দুই শক্তির সম্মিলিত বৃদ্ধির হার আবার বছরে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ। যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক-ষষ্ঠাংশেরও বেশি।  

জীবাশ্ম জ্বালানির দিকে নজর দিলে দেখা যায়, কয়লাকে ২৬ দশমিক ১৩ ও পারমাণবিক শক্তিকে ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ হারে ছাড়িয়ে গেছে নবায়নযোগ্য শক্তি। 

হিসাবটি ২০২২ সালের প্রথম ৩ মাসের। ২০২১ সালের একই সময়ে কয়লা জ্বালানি ও পরমাণু শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের হার যথাক্রমে ৩ দশমিক ৯ ও ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

সানডে ক্যাম্পেইনের নির্বাহী পরিচালক কেন বসং এ বিষয়ে বলেছেন, 'কোভিড-১৯ মহামারি, গ্রিড অ্যাক্সেস সমস্যা ও বৈশ্বিক যোগান ব্যবস্থায় নানান বাধার মতো প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও সৌর ও বায়ুশক্তির প্রবৃদ্ধি বেশ আশাব্যঞ্জক।' 

এ ছাড়া, পরমাণু শক্তিকে আরও বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে দেবার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তির বৃদ্ধি গতিশীল করার দিকে খেয়াল না করা এবং সম্প্রতি বন্ধ হওয়া ক্যালিফোর্নিয়ায় ডায়াবলো ক্যানিয়ন পারমাণবিক কেন্দ্র এবং মিশিগানের প্যালিসেডস চুল্লিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টাটা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। 

কার্যকারিতা মাথায় রেখে খুব সম্ভব শক্তি সংকটের উপায় হিসেবে বায়ু ও সৌরশক্তিকে নতুন করে কাজে লাগানো হবে। উন্নত দেশগুলোর এমন পদক্ষেপ গ্রহণ দেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ পথে এগোতে পারে। বেশ আশার আলোই দেখাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে সৌর ও বায়ুশক্তির এ প্রবৃদ্ধি।

 

গ্রন্থনা: অনিন্দিতা চৌধুরী 

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka College, City College students clash at Science Lab; traffic halted

A clash broke out between the students of Dhaka College and City College in the capital's Science Laboratory area today

42m ago