কিশোর দা’র কণ্ঠ ছিল গলিত সোনার প্রবাহ: কনকচাঁপা

এন্ড্রু কিশোর। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/ স্টার ফাইল ফটো

এন্ড্রু কিশোরের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২০ সালের ৬ জুলাই না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বাংলা সিনেমার গানের এই প্লেব্যাক সম্রাট। ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

শিল্পীর কণ্ঠে উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে—'আমার সারা দেহ খেও গো মাটি', 'আমার বুকের মধ্যেখানে', 'হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস', 'আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন', 'ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে', 'আমার গরুর গাড়িতে', 'তোমায় দেখলে মনে হয়', 'পড়ে না চোখের পলক' ইত্যাদি।

তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা।

তিনি বলেন, 'কিশোর দা ছিলেন প্রাণশক্তিতে ভরপুর মানুষ। মনের জোর এত বেশি ছিল যে, প্রতিটি গান রেকর্ডিংয়ে তার উপস্থিতিতে যত গান গেয়েছি, কখনো এক সেকেন্ডের জন্য তার মুড অফ হতে দেখিনি। খুবই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ ছিলেন।'

'যত বার গান গাওয়ার সময় দেখা হয়েছে, প্রতিবারই মনে হয়েছে কিছু না কিছু শিখেছি। তার কাছ থেকে সাহস নিতাম। সমস্যায় পড়লে তার সমাধান দিতেন। তিনি নেই এটা ভাবতে পারি না। উনি অসুস্থ হওয়ার পর মাত্র ২-১ বার কথা বলেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'শিল্পী হিসেবে এন্ড্রু কিশোরের প্রথমে যে গানটার কথা বলব, সেটা হলো—'ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে'। এটি দিয়েই সমস্ত বাংলাদেশের  শ্রোতার মন জয় করেছিলেন।'

'ফিল্মের গানে শিল্পীর প্রধান কাজটা হলো স্ক্রিন ভরিয়ে রাখা। খেয়াল করলে দেখবেন যে, দেশে তো অনেক কণ্ঠশিল্পী আছেন। কিন্তু, প্লেব্যাক শিল্পীর সংখ্যা খুবই কম। কারণ, প্লেব্যাক যিনি করবেন তার কণ্ঠ হতে হয় শক্তিশালী। হলরুমের বড় স্ক্রিনটা ভরে থাকতে হয়। যখন একটা গান বাজবে সেটার শব্দে চারপাশ গমগম করবে। এখনকার ডলবি সাউন্ড সিস্টেমে নয়, যখন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাউন্ড সিস্টেম ছিল না তখনো আমাদের আবদুল আলীম, সৈয়দ আবদুল হাদীর কণ্ঠ হলের সেই পুরনো সাউন্ড সিস্টেমেই গমগম করত। ওই জিনিসটা কিশোর দা'রও ছিল। তার কণ্ঠ ছিল গলিত সোনার প্রবাহ। সোনা যখন গলানো হয়, তখন যদি একটা প্রবাহ হয়, ঠিক সেটার যে সৌন্দর্য, যে শক্তি, উজ্জ্বলতা—সেটাই ছিল কিশোর দার কণ্ঠে।'

'এন্ড্রু কিশোর এতটা ক্ষণজন্মা হবেন তা বিশ্বাস করা যায় না। আমার বাবা মারা গেলে যে কষ্টটা পেয়েছি, ঠিক একই কষ্ট পেয়েছি কিশোর দা চলে যাওয়ায়। অনেক মানুষ প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, এতই যদি কষ্ট হয় তাহলে মরদেহ দেখতে যাননি কেন?' কারণ আমি তা দেখতে চাইনি। আমার মানসপটে কিশোর দা'কে যেভাবে সারাজীবন দেখে এসেছি ওটাই ধরে রাখতে চাই।'

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

2h ago