বাংলাদেশের একশো ছাড়ানো পুঁজির পর ম্যাচ পরিত্যাক্ত
আগের দুদিনের বৃষ্টিতে ভেজা মাঠে ম্যাচ শুরু হলো এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর। ওভার কমে শুরুর পরও দুই দফায় বাংলাদেশের ইনিংস থামাল বৃষ্টি। সব মিলিয়ে যা খেলা হলো তাতে সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে একশো ছাড়ানো পুঁজি পায় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই রান আর তাড়ার সুযোগই পেল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারণ কাট অফ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ম্যাচ পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
ডমিনিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি নির্ধারিত হয়েছিল ১৬ ওভারে। ৮ম ওভারে নামা বৃষ্টির পর আরও দুই ওভার কমে যায়। ১৩ ওভার পর আবার বৃষ্টিতে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ তুলে ৮ উইকেটে ১০৫ রান। ১৫ বলে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন সাকিব, ১৬ বলে ২৫ আসে সোহানের ব্যাটে।
কিন্তু রেকর্ডের খাতায় এসবের মূল্য আর থাকছে না। বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ দিকের বৃষ্টির পর স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৮ অতিক্রম করলে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হয় আম্পায়ারদের। কারণ ডমিনিকার এই মাঠে নেই কোন কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা। ম্যাচ পরিত্যাক্ত ঘোষণার সময় অবশ্য রোদে ভরপুর ছিল মাঠ। রোদ থাকতেই বিস্ময় আর হতশা প্রকাশ করেন দর্শকরা, হতাশা টিকরে বের হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষাতেও।
কিন্তু উপায় কি! আম্পায়াররা তো নিয়মে বাধা। কাট অফ সময় পেরিয়ে গেছে। ফ্লাড লাইট না থাকায় যেকোনো সময় নামবে অন্ধকার।
যা খেলা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের আশা-নিরাশার দুই ছবিই দেখা গেছে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আকিল হোসেনের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। এর আগে কাট করে ২ রান নিয়ে খুলেছিলেন রানের খাতা। ওই দুই রানেই থামতে হয় তাকে। ২ রানেই বাংলাদেশ হারায় প্রথম উইকেট।
৭ বছর পর টি-টোয়েন্টিতে ফেরা এনামুল হক বিজয় মুখোমুখি প্রথম বলেই আকিলকে লেট কাটে মারেন বাউন্ডারি। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে আরেক বাউন্ডারির পর কাভার দিয়েও আরেকটি পেয়েছিলেন। তবে থিতু হতে হতেও ইনিংস বড় করা হয়নি। ওবেদ ম্যাককয়ের বল আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে কাটা পড়েন এলবিডব্লিউতে। রিভিউ নিয়েও তা নষ্ট করেন তিনি। ফেরার ম্যাচে ১০ বলে ১৬ আসে বিজয়ের ব্যাটে।
তিনে নেমেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে থাকেন সাকিব। আকিলকে উড়ান চার-ছক্কায়। ম্যাককয়ের বলেও মারেন বাউন্ডারি। তার সৌজন্যে পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে ৪৬ রান আনে বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিম না থাকায় চারে নামানো হয় লিটন দাসকে। সেটা কাজে দেয়নি। নিজের সহজাত ভূমিকা বদলে এক দিক ধরে রেখে থিতু হওয়ার চেষ্টায় গড়বড় হয়ে যায় তার।
অনেকগুলো ডট বল খেলে নিজের উপর চাপ নিয়ে আসেন ছন্দে থাকা ব্যাটার। পরে রোমারিও শেফার্ডের স্লোয়ার বাউন্সারি পুল করতে গিয়ে উঠিয়ে দেন সহজ ক্যাচ। ১৪ বলে ৯ রানে থামে লিটনের ইনিংস।
লেগ স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র বল করতে এসেই সাকিবকে ফুলটস দিয়ে ছক্কা খেয়েছিলেন। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে তিনিই থামেন সাকিব ঝড়। ১৫ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় সাকিবের ২৯ রানের ইনিংস শেষ হয়েছে ওয়ালশের গুগলিতে। কিছুটা বেরিয়ে যাওয়া বল তাড়া করেন সাকিব ধরা দেন উইকেটের পেছনে।
৮ম ওভারে আবার নামে বৃষ্টি। তাতে আরও ২৭ মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। ম্যাচ নেমে আসে ১৪ ওভারে। বৃষ্টির পর নেমেই প্রথম বলে ওয়ালশ জুনিয়রকে মারতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে বিদায় নেন আফিফ হোসেন।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও টিকতে পারেননি। অনেকগুলো ডট বল খেলে বাউন্ডারির চেষ্টায় থামেন তিনি। শেফার্ডের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা দিয়ে ১৩ বলে ৮ করে শেষ হয় তার ইনিংস।
শেখ মেহেদি টিকতে পারেননি দুই বলের বেশি। কিপার-ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানের ক্যামিওয়ে দল পার করে তিন অঙ্ক। ২ ছক্কা, এক চারে ১৬ বলে ২৫ করে থামেন তিনি। ১৩ ওভারে ৮ উইকেটে ১০৫ রান করার পর আবার নামে বৃষ্টি। এক ওভার আগেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
Comments