সেন্ট লুসিয়ায় অনেক রান দেখছেন সাকিব
অ্যান্টিগার চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে টেনেটুনে একশো পার করাই ছিল মুশকিল। তুলনায় সেন্ট লুসিয়ার উইকেট আরও বেশি গতিময় ও বাউন্সি। তবে অ্যান্টিগার মতো মুভমেন্ট না থাকায় এসব উইকেটে স্কোরিং শটের হারও থাকে বেশি। ব্যাট করার জন্য তাই অ্যান্টিগার চেয়ে সেন্ট লুসিয়াকে আদর্শ মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
অ্যান্টিগায় ব্যাটিং ব্যর্থতায় সোয়া তিনদিনে বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের মিশন হার এড়ানোর।
মাঠে নামার আগে উইকেট দেখে সাকিব বেশ ইতিবাচক। উইকেটে গতি আছে, বাউন্স থাকবে ভালোই, তবে মুভমেন্ট না থাকলে রান বাড়ানো হবে সহজ। সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট কাপ্তান বললেন তেমনটাই, 'প্রথমদিন অ্যান্টিগা টেস্টের চেয়ে ভালো উইকেট হবে, ব্যাটিংয়ের জন্য। পেস, বাউন্স একটু থাকবে। কিন্তু ওইরকম সাইডওয়েজ মুভমেন্ট থাকবে বলে মনে হয় না। তবে না খেলা পর্যন্ত বলা সম্ভব না উইকেট আসলে কেমন হবে। আমরা যখন খেলাটা শুরু করব, এর ১৫-২০ মিনিট পর হয়তো আমরা বুঝতে পারব উইকেটটা কেমন।'
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভেন্যুগুলোর মধ্যে বর্তমানে সেন্ট লুসিয়ার উইকেটকে বেশি গতিময় বলা হচ্ছে। বল পিচড করে স্কিড করে অনেকটা। এতে মানিয়ে নিতে পারলে রান বের করাটা সহজ দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, 'সেটা আমরাও জানি। দেখুন এমন উইকেটে স্বাভাবিকভাবে রানটা বেশি হয়। খেলাটাও দ্রুত হয়। তাড়াতাড়ি রানের সম্ভাবনা থাকে। হরিজন্টাল ব্যাট শটগুলো বেশি কাজে আসে। আমাদের পেস ও বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। আজকে একটা নেট সেশন আছে। আমার মনে হয় মানিয়ে নিতে পারব। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন নিউজিল্যান্ড কিংবা অন্যান্য দেশে এ ধরনের উইকেটই থাকে। আমাদের খেলোয়াড়রা যেহেতু এই সব ধরনের কন্ডিশনে খেলে অভ্যস্ত, খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না।'
গত তিন টেস্ট ধরেই ব্যাটসম্যানরা ভুগছেন পেস বলে। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় নাকাল হয়েছেন স্পিনে। সাকিবের মতে পেস হোক বা স্পিন- উইকেটে চ্যালেঞ্জ থাকলেই তারা হয়ে যান নড়বড়ে, 'সর্বশেষ তিন টেস্ট যদি দেখেন, তাহলে বলতে পারেন। তার আগের তিন টেস্ট দেখলে বলবেন স্পিন। সুতরাং কঠিন কন্ডিশনে আমরা কখনোই টিকতে পারিনি। এখানে একটা সুযোগ, চ্যালেঞ্জও। এখন এটাকে আমরা কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারি সেটা দেখতে হবে।'
সেন্ট লুসিয়ায় বাংলাদেশ খেলেছে দুই টেস্ট। ২০০৪ সালে সেখানে প্রথমবার খেলতে নেমে ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ড্র করে ফেলেছিল হাবিবুল বাশার সুমনের দল। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন অধিনায়ক হাবিবুল ও মোহাম্মদ রফিক। মোহাম্মদ আশরাফুল করেছিলেন ৮২ রান। টেস্টে প্রথমবার লিডও নিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন খালেদ মাসুদ পাইলট। ২০১৪ সালে মুশফিকুর রহিমের বাংলাদেশ দল এই ভেন্যুতে বিধ্বস্ত হয়েছিল ২৯৬ রানে। এই মাঠে চতুর্থ ইনিংসে ভূমিকা রাখেন স্পিনাররা। গত বছর সর্বশেষ টেস্টেও কেশব মহারাজ নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। যদিও দুই ইনিংস মিলিয়ে সাফল্যে ম্যাচ সেরা হন কেশব মহারাজ।
এই টেস্টে মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্তের ছন্দহীনতা ব্যাটিং লাইনআপে একটি বদলের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। মোস্তাফিজুর রহমানের জায়গায় বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম খেলতে পারেন। আট বছর পর টেস্ট স্কোয়াডে ফিরে একাদশেও জায়গা পাওয়ার পথে এনামুল হক বিজয়। তবে তাকে জায়গা করে দিতে মুমিনুল না শান্ত কাকে বাইরে রাখা হবে তা এখনো বলার উপায় নাই।
বরাবরের মতো সাকিব একাদশ নিয়ে রাখলেন রহস্য, 'আমাদেরও মাথায় বেশ কিছু চিন্তা আছে। আজকের ট্রেনিং সেশন শেষ হলে আমরা বসব। এরপর একটা মিটিং করে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া, যাতে করে সবাই জানে যে কারে খেলছে কারা খেলছে না।'
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি স্টেডিয়ামে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
Comments