খালেদের ঝলকে বাড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজের অপেক্ষা

Khaled Ahmed
ফাইল ছবি- এএফপি

সকালের শুরুটা আভাস দিচ্ছিল ম্যাচ দ্রুত শেষ হওয়ার। বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিল ইনিংস হার। চরম বিপদ থেকে শতরানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ে ফেরান সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। পরে ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্রুত তিন উইকেট তুলে নাটকীয়তা তৈরি করেন খালেদ আহমদ। যদিও সব সামলে জেতার পথেই আছে ক্যারিবিয়ানরা। কাজটা তৃতীয় দিনের বদলে তাদের করতে হবে চতুর্থ দিনে। 

অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে জয় থেকে আর কেবল ৩৫ রান দূরে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৮৫ রানের লক্ষ্যে নেমে তাদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪৯ রান।  ওপেনার জন ক্যাম্পবেল ২৮ ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড অপরাজিত আছেন ১৭ রানে।

পুঁজিটা ৮৪ রানের। তা নিয়ে লড়াই করা খুবই কঠিন। কিন্তু খালেদ আহমেদ দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে যেভাবে আগুন ঝরালেন তাতে অসম্ভবের আশাও যে জেগে উঠেছিল।

নিজের প্রথম ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট আর রেমন রিফারকে। পরের ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে উড়িয়ে দেন এনক্রুমা বোনারের স্টাম্প। মাত্র ৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

খালেদের লেগ স্টাম্পের বাইরে থাকা বলে ব্যাট লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ব্র্যাথওয়েট। দারুণ ভেতরে ঢুকতে থাকা এক বলে পরাস্ত হয়ে রেমন রেইফারও হন কট বিহাইন্ড। স্কিড করে ভেতরে ঢোকা বলে স্টাম্প উড়ে যায় বোনারের।

তবে খালেদের মতো চাপটা রাখতে পারেননি বাকিরা। আরেক পাশে মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন গড়পড়তা। মেহেদী হাসান মিরাজ বল হাতে নিয়েই দেন ওভারে ১০ রান। চাপ যায় সরে। ইবাদত হোসেনও বল হাতে নিয়ে এদিন কিছু করতে পারেননি।

বাকিটা সময় অনায়াসে রান বাড়ান ক্যাম্পবেল-ব্ল্যাকউড। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে তুলে ফেলেছেন ৪০ রান। 

এর আগে ২ উইকেটে ৫০ রান নিয়ে খেলতে নেমে প্রথম সেশনে দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে ইনিংস হারের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে গল্পটা হলো ভিন্ন। উইকেটকিপার সোহানকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে দারুণ এক সেশন পার করেন সাকিব।

তাদের শতরানের জুটিতে ম্যাচে লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ফিরতে পারতেন সাকিব। ৫১তম ওভারের তৃতীয় বলে কাইল মেয়ার্সের বলে কট বিহাইন্ড হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ রিভিউ না নেওয়ায় বেঁচে যান তিনি।

৫ রানে জীবন পাওয়া সাকিব আর ভুল করেননি। সোহানকে নিয়ে গড়েন প্রতিরোধ। রান বাড়াতে থাকেন দ্রুত। সোহান শুরুতে ছিলেন বেশ সতর্ক। থিতু হয়ে তিনিও মেলে ধরেন ডানা। উইকেট ও কন্ডিশনও বেশ ভালো হয়ে যায়।

ক্যারিবিয়ান বোলাররা বাড়তি আক্রমণ করতে গিয়ে বেশ কিছু সহজ রান দিয়ে দেন। সাকিব-সোহান সুযোগ কাজে লাগান দারুণভাবে। সপ্তম উইকেটে জুটিতে ১০১ রান আনার পর চা-বিরতিতে যান তারা।

চা-বিরতির পর দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েই সাফল্য পায় ক্যারিবিয়ানরা। কেমার রোচের বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৬৩ করা সাকিব। খানিক পর সোহানও শিকার রোচের। ৬৪ করে তিনি ধরা দেন উইকেটের পেছনে। আলজারি জোসেফ মোস্তাফিজকে ছেঁটে ফেলার পর ইবাদতকে তুলে ইনিংস মুড়ে দেন রোচ। দশমবারের মতো টেস্টে পান পাঁচ উইকেটের দেখা।

দিন শুরুর পর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। মেয়ার্স আর কেমার রোচের তোপে একে একে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়। টানা রান খরা এই ইনিংসেও দূর করতে পারেননি শান্ত আর মুমিনুল। শান্ত ভাল খেলছিলেন। থিতু হয়েও ১৭ রান করে দেন স্লিপে ক্যাচ। মুমিনুলের আরও একবার দুই অঙ্কের ঘরে যাওয়া হয়নি। ৪ রান করে তিনি আরেকটি ভেতরে ঢোকা বলে কাবু। এই নিয়ে টানা ৯ টেস্ট ইনিংসে এক অঙ্কের ঘরে আউট হলেন তিনি।

ম্যাচের এখন যা অবস্থা তাতে অতি নাটকীয় কিছু না হলে চতুর্থ দিন সকালে স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা সেরে নিবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অল্প পুঁজি নিয়েও লড়াইয়ের জায়গা তৈরি হওয়ায় টপ অর্ডারের ব্যর্থতা নিশ্চিতভাবেই আক্ষেপের জায়গা হবে বাংলাদেশের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১০৩

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ২৬৫

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ২৪৫

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস: (লক্ষ‍্য ৮৪) ১৫ ওভারে ৪৯/৩ (ব্র‍্যাথওয়েট ১, ক‍্যাম্পবেল ২৮*, রিফার ২, বনার ০, ব্ল‍্যাকউড ১৭*; মুস্তাফিজ ০/৭, খালেদ ৩/১৪, মিরাজ ০/১০, ইবাদত ০/১৪, সাকিব ০/৩)

Comments

The Daily Star  | English

CA wraps up 4-day Davos trip after joining 47 events

He joined meetings with four heads of government or state, four ministerial-level dignitaries, 10 heads or top executives of UN or similar organisation, 10 CEOs or high-level business persons, nine programmes of the WEF, eight media engagements and two other events

49m ago