বন্ধই হয়ে গেল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার

ধীরগতির জন্য শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার
ধীরগতির জন্য শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। ছবি: সংগৃহীত

মাইক্রোসফট ঘোষণা দিয়েছে, প্রায় ২৭ বছর চালু থাকার পর প্রতিষ্ঠানটি পুরনো ইন্টারনেট ব্রাউজার 'ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার' বন্ধ করে দিচ্ছে। ডেস্কটপ কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ১৯৯৫ সালে প্রথমবারের মত এই অ্যাপ চালু করা হয়েছিল।

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আজ বুধবার ১৫ জুন থেকে ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ কম্পিউটারে ব্যবহৃত এই অ্যাপটি অকার্যকর হয়ে যাবে। কেউ ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহারের চেষ্টা চালালে তাকে মাইক্রোসফটের নতুন ব্রাউজার 'এজ' এ নিয়ে যাওয়া হবে।

গুগল, ফেসবুক ও টিকটক যুগের বহু আগে জনমানুষের জন্য ইন্টারনেটের দরজা খুলে দিয়েছিল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। একটি প্রজন্মের প্রায় সব সদস্যের ইন্টারনেট ব্যবহারের হাতেখড়ি হয়েছে এই ব্রাউজারের মাধ্যমে।

সে যুগে, সিডি-রম প্রযুক্তির ব্যবহারে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ও এই ব্রাউজারটি কম্পিউটারে ইন্সটল করতে হত।

অনেক বিশ্লেষকদের মতে, উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত অবস্থায় বিনামূল্যে পাওয়া ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার মাইক্রোসফটের প্রাথমিক সাফল্যের জন্য অনেকাংশে দায়ী। তবে শুরু থেকেই এই ব্রাউজারটি বেশ ধীরগতির ছিল। ফলে মোজিলার ফায়ারফক্স এবং পরবর্তীতে গুগল ক্রোম আসার পর সবাই এক্সপ্লোরার ব্যবহার বাদ দিয়ে সেসব ব্রাউজার ব্যবহার শুরু করে। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়ায়, যে এক পর্যায়ে মানুষ কৌতুক করে বলতে শুরু করে, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের একমাত্র কাজ হচ্ছে ক্রোম ডাউনলোড করা।

তবে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে ওয়েবসাইট নির্মাতারা এই ব্রাউজারকে সাপোর্ট না করার সম্ভাবনা থেকেই মূলত এ সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

২৭ বছর পর বন্ধ হয়ে গেল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। ফাইল ছবি: রয়টার্স

মাইক্রোসফট আরও জানায়, বিভিন্ন নতুন ও অনেক ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটও ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে ঠিক মত কাজ করছিল না। এ সমস্যাগুলোর সমাধানের পেছনে অনেক সময় ও সম্পদ ব্যয় হচ্ছিল, যা এক পর্যায়ে 'অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়।'

বেশ কিছুদিন ধরে মাইক্রোসফট চেষ্টা করেছে এক্সপ্লোরার ব্যবহারকারীদেরকে নতুন ব্রাউজার এজ এর বিষয়ে আগ্রহী করে তোলার। ২০১৫ সালে উন্মোচিত এজ ব্রাউজার তৈরি হয়েছে গুগলের ওপেন সোর্স ক্রোমিয়াম প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে।

এর আগে প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে মাইক্রোসফট টিমস, উইন্ডোজ ১০ ও মাইক্রোসফট ৩৬৫ থেকে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার প্রত্যাহার করেছে।

যদি এমন কোনো প্রাচীন ওয়েবসাইট থেকে থাকে, যেটি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ছাড়া খোলা যায় না, সেটার জন্য এজ এ একটি 'আইই মোড' রাখবে মাইক্রোসফট।

আনুষ্ঠানিকভাবে আজ থেকে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বন্ধ হলেও, বহু আগেই মানুষ এটি ব্যবহার করা বন্ধ করেছে। এ ঘটনায় এটা আবারও প্রমাণ হল, যে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে কোনো পণ্য বা সেবাই টিকে  থাকতে পারে না।

 

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

5h ago