‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি প্রদানে নির্বাচন কমিশনের অগাধ ক্ষমতা আছে’

সুজনের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: স্টার

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনকে এলাকা ছাড়তে দুই দফা চিঠি দিয়েও তাকে এলাকাছাড়া করতে পারেনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সংসদ সদস্য নির্দেশ না মানলে তাদের 'কিছুই করার নেই'।

এই ঘটনাকে 'নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব প্রকাশ' হিসেবে উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন বলেছে, 'নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শাস্তি প্রদানে নির্বাচন কমিশনের অগাধ ক্ষমতা রয়েছে। সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে।'

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সুজন এক সংবাদ সম্মেলনে 'কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন' করে।

এক প্রশ্নের জবাবে সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'জানি না প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ ধরনের মন্তব্যের প্রভাব সেখানে কী রকম হবে। তারা যেখানে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে, সেখানে ওই নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হবে, আমরা কীভাবে আশাবাদী হতে পারি?'

তিনি ২০১৬ সালে প্রণীত সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালার ২২ ধারা উল্লেখ করে বলেন, 'সরকারের একজন সুবিধাভোগী হিসেবে ওই সংসদ সদস্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। এই ধারা লঙ্ঘন করলে নির্বাচন কমিশন কী ব্যবস্থা নিতে পারে, সেটাও স্পষ্টভাবে ওই বিধিমালার ৩২ ধারায় বলা আছে।'

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, 'কমিশন চাইলে তাৎক্ষণিক লিখিত আদেশ দ্বারা যে প্রার্থীর পক্ষে সংসদ সদস্য প্রচারণা চালিয়েছেন, তার প্রার্থিতা বাতিল করতে পারেন। তাছাড়া উচ্চ আদালতের রায় আছে, যেখানে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের অগাধ ক্ষমতা রয়েছে, অন্তর্নিহিত ক্ষমতার কথা বলা আছে। তারা চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচনের খাতিরে নতুন বিধিবিধান সংযোজন-বিয়োজনও করতে পারেন।'

তিনি বলেন, 'অনেকে বলে থাকেন, নির্বাচন কমিশনের দিনকে রাত করা আর রাতকে দিন করা ছাড়া সব ধরনের ক্ষমতা দেওয়া আছে। সেখানে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে তাদের নির্দেশনা একজন সংসদ সদস্য মানছেন না। সামনে জাতীয় নির্বাচন, পুরো প্রশাসন, সরকারি দল, বিরোধী দলের নেতারা নির্বাচন কমিশনের অধীনস্থ থাকবেন, সেখানে যদি তারা সবাই নির্বাচন কমিশনের আদেশ অনুরোধ অমান্য করা শুরু করেন, তখন আমরা কোথায় যাব?'

নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা নাগরিকদের কাছে। আর নির্বাচন মানেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেখানে নির্বাচন কমিশনকে সাহসিকতা ও বলিষ্ঠতার পরিচয় দিতে হবে।

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার কুসিক নির্বাচনে প্রার্থীদের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন দুইবার চিঠি দেওয়ার পরও সংসদ সদস্য যেখানে এলাকা ছেড়ে যাননি, সেখানে নির্বাচন কমিশন যে সঠিক ও স্বাধীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে বা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত হবে কি না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

10h ago